
২০২০ থেকে ২০২২… একটা দীর্ঘ, বিভীষিকাময় অধ্যায়। কত না জীবন থমকে গিয়েছিল, কত স্বপ্ন ভেঙে চুরমার! লকডাউনের খাঁচায় বন্দী দিনগুলোর স্মৃতি আজও যেন শরীরে কাঁটা দেয়। সেই ভয়াবহ স্মৃতি উস্কে দিয়ে, তিন বছর পর ফের একবার দেশজুড়ে নিঃশব্দে বাড়ছে করোনার আনাগোনা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন বলছে, দেশ পেরিয়েছে চার হাজারের গন্ডি। একদিনে ঝরে গেছে পাঁচটি প্রাণ। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭। সোমবার পর্যন্ত এই সংখ্যাটা ছিল খানিকটা স্বস্তিদায়ক— ৩ হাজার ৯৬১। কিন্তু উদ্বেগের কাঁটা বিঁধছে অন্যখানে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণের নিরিখে দিল্লিকে টেক্কা দিচ্ছে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ!
আরও একটা দুঃসংবাদ যেন জমাট বাঁধা অন্ধকারের মতো। এই বছর রাজ্যে প্রথম কোভিড-রোগীর মৃত্যু! আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে সপ্তাহখানেক ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন ৪৩ বছর বয়সের এক মহিলা। শেষ পাঁচটা দিন কেটেছে ভেন্টিলেশনে। মৃত্যুসনদে শুধু করোনা নয়, উল্লেখ রয়েছে কোমর্বিডিটিরও—হৃদযন্ত্র আর কিডনির জটিলতা, শেষে সেপটিক শক।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও পাঁচটি জীবন থেমেছে করোনার ছোবলে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, দেশে মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৩৭। আর এই সময়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ জন। রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ৩৭২। গোটা দেশে এই সংখ্যাটা ৪ হাজার ২৬।
তিন বছর আগের সেই দমবন্ধ করা দিনগুলোর স্মৃতি কি তবে আবার ফিরে আসছে? ভয় আর উদ্বেগের একটা চাপা গুঞ্জন যেন ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মাস্ক হয়তো আবার পকেট থেকে বেরিয়ে আসবে, স্যানিটাইজারের বোতলটা খুঁজে নিতে হবে আলমারির কোণ থেকে। প্রশ্ন একটাই—এই নতুন ঢেউ কতটা ভয়ঙ্কর হবে? কতটা ক্ষত ফের বয়ে আনবে আমাদের জীবনে? সময়ই এর উত্তর দেবে, তবে সতর্কতা আর সচেতনতাই এখন একমাত্র হাতিয়ার।