ফিলিপাইনস শহরের বুসকালান গ্রামের ১০৭ বছর বয়সী বিশ্বের প্রবীণ ট্যাটু শিল্পী অপো হ্যাং-ওড, যিনি নব্বই বছরেরও বেশি সময় ধরে ঐতিহ্যবাহী ট্যাটু করে আসছেন। এখনও বুসকালান গ্রামের পাহাড়ে, প্রতিদিন বহু মানুষ তার কাছে আসেন ট্যাটু করানোর জন্য।
হ্যাং-ওড ট্যাটুতে ‘বাটোক’ নামে একটি প্রাচীন হ্যান্ড-ট্যাপিং পদ্ধতি ব্যবহার করেন। এই পদ্ধতিতে হাতের সাহায্যে সূক্ষ্ম একটি প্যাটার্ন চামড়ায় আঁকা হয়। তার সবচেয়ে পরিচিত নকশা হলো ৩টি বিন্দুর ট্যাটু।
আমি আর জটিল নকশায় ট্যাটু করতে পারি না সেজন্যই আমি ৩টি বিন্দু সমন্বিত আমার স্বাক্ষর ট্যাটু তৈরি করেছি। এটি আমার পক্ষে সহজ এবং আমি এখানে আগত বেশিরভাগ পর্যটককে মানিয়ে নিতে পারি’।
সম্প্রতি এক ভিডিওতে দেখা যায়, পর্যটকরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন হ্যাং-ওড এর কাছ থেকে ট্যাটু করানোর জন্য। যারা তার কাছে ট্যাটু করাচ্ছেন, তাদের অভিজ্ঞতা ছিলো বিশেষ।
তাদের একজন বলেন, ‘প্রক্রিয়াটিতে কিছুটা ব্যথা ছিল। কিন্তু আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আমি বিখ্যাত এই শিল্পীর কাছ থেকে ট্যাটু পাচ্ছি’।
অন্য আর একজন বলেন, ‘এটি আমার জন্য একটি বিশেষ সম্মান। আমি খুবই আনন্দিত’।
হ্যাং-ওডের ট্যাটু শিল্পের শুরু তার ১৫ বছর বয়স থেকে। তিনি সে সময় থেকেই উপজাতীয় যোদ্ধাদের এবং মহিলাদের ট্যাটু করতে শুরু করেছিলেন। ঐতিহ্যবাহীভাবে, যোদ্ধারা তাদের যুদ্ধের কৃতিত্ব চিহ্নিত করতে ট্যাটু পেতেন। বর্তমানে, তিনি পর্যটকদের জন্য এই ঐতিহ্য বজায় রাখছেন।
হ্যাং-ওডে বলেন, ‘আমি সবাইকে আমাকে দেখতে আসতে ও ট্যাটু করাতে বলতে চাই, কারণ আমি এখনও শক্তিশালী এবং আমার দৃষ্টিশক্তি ভালো আছে। আমি এখনও বেঁচে আছি, আমার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করবেন না আপনারা, চলে আসুন’।
অপো হ্যাং-ওডের ট্যাটু শুধু একটি নকশা নয়; এটি একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বুসকালান গ্রামের পাহাড়ে তার কাছে আসা পর্যটকরা কেবল ট্যাটু করাচ্ছেন না, তারা একটি প্রাচীন সংস্কৃতির অংশীদারও হচ্ছেন।
হ্যাং-ওডের শিল্প নতুন প্রজন্মকে ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দিচ্ছে এবং ফিলিপাইনের সংস্কৃতির প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়াচ্ছে।