
ডেনমার্কের অধীনে থাকা আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডকে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার তিনি গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দাদের আরও ধনী বানিয়ে দেওয়ারও প্রলোভন দেখিয়েছেন। তবে ট্রাম্পের এমন প্রলোভনেও কোনো কাজ হয়নি। গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুটে এগেদে বলেছেন, গ্রিনল্যান্ডবাসীরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই নির্ধারণ করবে এবং তারা আমেরিকান বা ড্যানিশ হতে চায় না।
বুধবার এক বিবৃতিতে এগেদে বলেন, ‘আমরা আমেরিকান নই, ডেনিশও নই। আমরা ক্যালাল্লিট (গ্রিনল্যান্ডবাসী)। আমেরিকা ও তাদের নেতাকে এটা বুঝতে হবে। আমরা বিক্রির জন্য নই এবং আমাদের কেড়ে নেওয়া যাবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ আমরা নিজেরাই নির্ধারণ করব।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতে (বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার) মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া বার্ষিক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘একভাবে বা অন্যভাবে, আমরা গ্রিনল্যান্ডকে চাই।’
দ্বীপটির জনগণকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা তোমাদের নিরাপদ রাখব, তোমাদের ধনী করব এবং গ্রিনল্যান্ডকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যাব যা তোমরা আগে কখনো ভাবতেও পারোনি। এটি একটি বিশাল ভূখণ্ড, কিন্তু জনসংখ্যা কম। এটি সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দীর্ঘদিন ধরেই গ্রিনল্যান্ডকে নিজের দেশের অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনার কথা বলে আসছেন। তিনি দ্বীপটির কৌশলগত অবস্থান ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন।
তবে গ্রিনল্যান্ডের শাসক দল ইনুইট আতাগাতিগিত স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা কোনো তড়িঘড়ি স্বাধীনতা ভোট আয়োজন করবে না। ১১ মার্চের সাধারণ নির্বাচনের পর তারা অর্থনীতি ও সামাজিক কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
জরিপ অনুসারে, গ্রিনল্যান্ডের বেশির ভাগ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চায় না। তবে অনেকেই ভবিষ্যতে ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পক্ষে।
এদিকে, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেই গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে ন্যাটো মিত্র ডেনমার্ক স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছিল, দ্বীপটি বিক্রির জন্য নয়।
গ্রিনল্যান্ডের ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হতে পারে। এটি ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকার স্বল্পতম রুটে অবস্থিত, যা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতা ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে গ্রিনল্যান্ডবাসীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘আমরা তোমাদের নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকারকে সমর্থন করি। তবে যদি তোমরা চাও, আমরা তোমাদের যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানাব।’ তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘একভাবে বা অন্যভাবে, আমরা এটি পাবই।’