সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে এক ছাত্রীর ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে যখন রাজ্য জুড়ে ক্ষোভের ঝড়, তখন ঘটনার মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের আইনজীবী দাবি করলেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ এবং তাঁকে পরিকল্পনা করে ফাঁসানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতা ছাত্রী মিথ্যে অভিযোগ করছেন বলেও স্পষ্ট ভাষায় মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মনোজিতের আইনজীবী বলেন,“মনোজিতের ঘাড়ে আমি নিজে ‘লাভ বাইট’ দেখেছি। এটা ধর্ষণের নয়, বরং পারস্পরিক সম্মতির ইঙ্গিত দেয়। রেপ হলে সেখানে লাভ বাইট থাকে না।”
তিনি আরও বলেন,“যাঁরা কেবল একপাক্ষিকভাবে ঘটনাটি দেখছেন, তাঁদের বলব—এফআইআর পড়লেই বোঝা যাবে এটা একটা সাজানো ষড়যন্ত্র।”
মনোজিতের আইনজীবী অভিযোগ করেন, এতদিনে যদি সত্যিই কোনও জঘন্য অপরাধ ঘটত, তাহলে কেন সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ জানানো হয়নি? তাঁর বক্তব্য,“ওই ছাত্রী কী কী করেছেন, সে সম্পর্কে যথাসময়ে প্রমাণ পেশ করা হবে।”
গত ২৫ জুন রাতে, সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজের চত্বরে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। মূল অভিযুক্ত মনোজিত ছাড়াও অভিযুক্ত তালিকায় রয়েছে জইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়ের নাম। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ চারজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মনোজিত, জইব ও প্রমিতকে আজ আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ ৮ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেফাজত বাড়ানো হয়েছে ৪ জুলাই পর্যন্ত।
ঘটনায় যেখানে নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্টে শরীরে আঁচড়, যৌনাঙ্গে ক্ষত ও গলায় কামড়ের দাগ মিলেছে, সেখানে অভিযুক্তের ঘাড়ে পাওয়া ‘লাভ বাইট’ নিয়েও শুরু হয়েছে আইনি বিতর্ক। একদিকে পুলিশের তদন্ত, অন্যদিকে আদালতের শুনানি—এই ঘটনাকে ঘিরে গোটা রাজ্যজুড়ে চলছে উত্তেজনা।
তদন্ত যত এগোচ্ছে, সামনে আসছে নানা তথ্য। সত্যিই কী ঘটেছিল ওই রাতে? কারা দোষী, আর কারা ফাঁসানো হচ্ছে—সেসবের উত্তর দেবে আদালত, তবে তার আগেই এই মামলায় তুঙ্গে বিতর্ক।