কানাডাকে দখল করাই ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য? বিস্ফোরক দাবি ট্রুডোর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির মূল উদ্দেশ্য কানাডার অর্থনীতি ধ্বংস করা, এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তাঁর অভিযোগ, কানাডার অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিয়ে একপ্রকার দখল নেওয়ার ছক কষছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি ওয়াশিংটন কানাডা থেকে জ্বালানি আমদানিতে ১০ শতাংশ এবং অন্যান্য সমস্ত পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, অবৈধ অভিবাসন এবং ফেন্টানিল পাচার রুখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে ট্রুডো বলেন, “ফেন্টানিলের অজুহাতে যে শুল্ক চাপানো হয়েছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা এবং অযৌক্তিক। ট্রাম্প আসলে আমাদের অর্থনীতির পতন ঘটাতে চান, যাতে কানাডাকে সহজেই আমেরিকার অংশ করে নিতে পারেন। কিন্তু আমরা তাঁর ফাঁদে পা দেব না।”

এছাড়া, রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে মার্কিন মিত্রদের সঙ্গে ট্রাম্পের এই বাণিজ্য বিরোধ কৌশল কতটা যুক্তিযুক্ত, সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ট্রুডো।

মার্কিন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রুডো সরকারও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। কানাডা মার্কিন প্রসাধনী, যন্ত্রপাতি, টায়ার, ফল, ওয়াইনসহ ৩০ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার মূল্যের আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে। এছাড়া, আগামী ২১ দিনের মধ্যে আরও ১২৫ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারের পণ্যের ওপর শুল্ক বসানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে কানাডা।

এই ঘোষণার পরই আবারও ট্রাম্প নতুন করে কানাডার রপ্তানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর হুমকি দেন। একইসঙ্গে ট্রুডোকে ব্যঙ্গ করে ‘গভর্নর’ বলে উল্লেখ করেন তিনি, যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, “দয়া করে কানাডার গভর্নর ট্রুডোকে বোঝান, যদি তিনি আমাদের ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে আমরাও ঠিক একই পরিমাণে পাল্টা শুল্ক বসাব।”

এর আগেও ট্রাম্প একাধিকবার ট্রুডোকে ‘গভর্নর’ আখ্যা দিয়ে কানাডাকে আমেরিকার ‘৫১তম স্টেট’ বানানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলে মনে করা হচ্ছে, বারবার এমন মন্তব্য করে কার্যত কানাডার সার্বভৌমত্বকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছে, গাড়ি, সেমিকন্ডাক্টর এবং ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক বসানো হবে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী এপ্রিল থেকেই এই নতুন শুল্ক কার্যকর হতে পারে।

এই শুল্ক যুদ্ধ উত্তর আমেরিকার অর্থনৈতিক ভারসাম্যকে কতটা প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে চলছে জোর চর্চা। তবে ট্রুডো স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মার্কিন প্রশাসনের চাপের কাছে কানাডা মাথা নোয়াবে না। এখন দেখার, আগামী দিনে এই উত্তপ্ত বাণিজ্য যুদ্ধ কোন দিকে মোড় নেয়।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy