
নদিয়ার কালীগঞ্জে বোমা বিস্ফোরণে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘিরে জোরালো প্রশ্ন উঠছে— এই ঘটনা কি ভোট-পরবর্তী হিংসারই অংশ? এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে নিহত শিশুটির কাকা সাহেব শেখের বক্তব্য থেকে।
তামান্নার কাকা সাহেব শেখ দাবি করেন,“ওরা আমার ভাই মোশাদুল শেখকে খুঁজতে এসেছিল। তাঁকে না পেয়ে আমাদের বাড়ির আশপাশেই থাকা শিশুদের দিকে সকেট বোমা ছোড়ে। সেই সময় আমি নিজেও ওদের নিশানায় পড়ে যাই।”
তিনি জানান, একাধিকবার তাঁর উপর বোমা ছোঁড়ার চেষ্টা হয়। এমনকি তিনি ঘরের ভিতর আশ্রয় নিলে, সেই ঘরের মধ্যেও সকেট বোমা ছোড়া হয়। উত্তেজনা বাড়তে দেখে সাহেব শেখ জানলা দিয়ে লাফিয়ে পালিয়ে যান, আর সেই সময়েই, তাঁর মতে, “আমায় না পেয়ে রাগে তামান্নার উপর হামলা চালায় ওরা।”
তামান্নার মা প্রশ্ন তুলেছেন,“আমার মেয়ে তো কোনও গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত নয়। তাহলে কেন তাকে টেনে আনা হল এই হিংসায়?”তিনি জানান, বারবার দুষ্কৃতীদের অনুরোধ করেছিলেন যেন এলোমেলোভাবে বোমা না ছোড়া হয়। কিন্তু তার পরেও দুষ্কৃতীরা তামান্নার দিকেই বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায় বলে তাঁর অভিযোগ।
পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে, যাঁরা প্রত্যেকেই স্থানীয়ভাবে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ। ধৃতরা হলেন— আদর শেখ, মানোয়ার শেখ, কালু শেখ ও আনওয়ার শেখ।
সূত্রের খবর, প্রথমে আদর শেখকে গ্রেফতার করা হয় এবং জেরার মুখে সে বাকি তিনজনের নাম ফাঁস করে। তাদের কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হবে। পুলিশ আরও খতিয়ে দেখছে, এই হামলার পিছনে আরও কেউ জড়িত কি না। ইতিমধ্যেই এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আরও একবার সামনে এসেছে প্রশ্ন— রাজনৈতিক রেষারেষির বলি কেন সাধারণ মানুষ, বিশেষত এক শিশু? এলাকায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
একটা বিষয় স্পষ্ট— তামান্নার মৃত্যু শুধুই একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা নয়, এটি রাজনৈতিক হিংসার এক নির্মম উদাহরণ হয়ে উঠেছে। প্রশাসন এবার কতটা দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ব্যবস্থা নেয়, এখন তাকিয়ে সেই দিকেই রাজ্যবাসী।