“আমি বার বার বারণ করার পরেও…!”-মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, গ্রেপ্তার হলেন শ্রমিক

ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের এক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক শ্রমিককে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হস্টেল থেকে চা খেতে বের হওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মার্শাল মুর্মু ওরফে লক্ষ্মীরাম মেডিক্যাল কলেজের নির্মীয়মাণ ভবনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। ঘটনার পর ছাত্রী পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলে ওই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঘটনার বিবরণ

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দা ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক সহপাঠীর সঙ্গে চা খেতে বেরিয়েছিলেন। রাস্তায় মার্শাল তাঁদের পিছু নেয় এবং ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। ছাত্রীরা তাকে সরে যেতে বললেও সে কথা না শুনে তাদের পিছু নিতে থাকে। ভয়ে ছাত্রীরা একটি টোটো থামান। অভিযোগ, টোটোতে ওঠার সময় মার্শাল ওই ছাত্রীর হাত ধরে টানাটানি করে।

ছাত্রী জানান, “আমি বারবার বারণ করার পরেও ওই যুবক আমাদের কথা শোনেনি। সে আমাদের মেডিক্যাল কলেজের নির্মীয়মাণ ভবনে কাজ করে। অনেক দিন ধরেই আমায় ফলো করত। ওই দিন আমি টোটোতে উঠতে গেলে সে আমার হাত ধরে টেনে ধরে রাখে। কোনও রকমে হাত ছাড়িয়ে আমি টোটোতে উঠি।”

পুলিশের পদক্ষেপ

ঝাড়গ্রামের এসডিপিও শামিম বিশ্বাস জানান, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই নির্মীয়মাণ ভবনের ওই শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার ধৃতকে ঝাড়গ্রামের সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।” পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং ঘটনার বিস্তারিত খতিয়ে দেখছে।

নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

এই ঘটনা ঘটে এমন এক সময়ে, যখন গত বছর কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ৮ অগস্ট রাতে এক তরুণী ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় হয়েছিল। ওই ঘটনার পর শহরের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের উপর জোর দেওয়া হয়। তবে ঝাড়গ্রামের এই ঘটনা ফের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষের নীরবতা

এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে যোগাযোগ করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অধ্যক্ষকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস পাঠানো হলেও তার কোনও উত্তর মেলেনি।

ছাত্রীদের ক্ষোভ

এই ঘটনায় কলেজের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, নিরাপত্তার অভাবে তাঁদের জীবন ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এই ঘটনা ফের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ছাত্রীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy