
“খেলবো হলি, রং দেব না তাই কখনও হয়?”—রঙের উৎসব মানেই আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর মজা। কিন্তু সত্যিই কি এই দিনটি সবার জন্য রঙিন থাকে? নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকের জীবনেই দোল বা হোলির দিনটি একটি অপ্রীতিকর স্মৃতি হয়ে দাঁড়ায়। এই তালিকা থেকে বাদ পড়েননি জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যও। তাঁর পরিবারের জীবনে এই রঙের উৎসব কীভাবে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছিল, সেই কাহিনি তিনি শোনালেন TV9 বাংলাকে।
অপরাজিতা সবসময়ই প্রতিবাদে বিশ্বাসী। ঠিককে ঠিক আর ভুলকে ভুল বলতে তিনি কখনও দ্বিধা করেন না। হাসিমুখে তিনি বললেন, “এই দিনে কত রকমের খবর চোখে পড়ে। কত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। বিশেষ করে মহিলাদের এই দিনটায় সচেতন থাকতে হয়। কারণ রঙ মাখানোর অজুহাতে গায়ে হাত দেওয়ার মতো ঘটনা যেন একটা ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়ে যায়। তাই অনেকেই হয়তো রঙ খেলা থেকে নিজেকে দূরে রাখেন। সত্যি কি এই রঙের উৎসব মেয়েদের জন্য রঙিন?”—এই প্রশ্ন তুলে ধরলেন অভিনেত্রী।
যদিও অপরাজিতার নিজের জীবনে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি, তবে তাঁর পরিবারের সঙ্গে একটি মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি জানালেন, বিপদ শুধু মেয়েদের জীবনেই নয়, পুরুষদের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। একবার দোলের সময় তাঁর দাদার সঙ্গে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। পরিবারের সঙ্গে তাঁরা শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলেন। সেখানে রঙের সঙ্গে একটি বিশেষ কেমিক্যাল মিশিয়ে তাঁর দাদার গায়ে মাখিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তাঁর দাদার গোটা শরীর পুড়ে যায়। প্রথমে পরিবারের কেউ বুঝতে পারেননি এর কারণ। পরে সমস্ত ঘটনা জানা যায়। এই অভিজ্ঞতা থেকে অপরাজিতা বললেন, “শুধু মেয়েদের নয়, নারী-পুরুষ সকলেরই সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই উৎসবে যোগ দেওয়া উচিত।”
তবে দোল বা হোলির উৎসব শুধুই খারাপ স্মৃতি নিয়ে আসে না। অপরাজিতা জানালেন, যেখানে আবির, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর মিষ্টি খাওয়ার পর্ব থাকে, সেই সেলিব্রেশন সত্যিই আনন্দের। এগুলো ভালোলাগার মুহূর্ত তৈরি করে। তাঁর কথায়, “দোল উদযাপনের অনেক ধরন আছে। যেগুলো সুন্দরভাবে পালন করা হয়, সেগুলো সত্যি মনে রাখার মতো হয়।”
অপরাজিতা আঢ্যের এই অভিজ্ঞতা এবং বক্তব্য রঙের উৎসবকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করে। তিনি সকলকে সুরক্ষিতভাবে এই উৎসব উপভোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। রঙের আনন্দে মেতে ওঠার পাশাপাশি সতর্কতা অবলম্বন করা যে জরুরি, সেই বার্তাই তুলে ধরলেন এই অভিনেত্রী।