
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার তীব্র প্রতিবাদে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত যে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করেছে, তাতে পাঁচজন ভারতীয় সেনা শহিদ হয়েছেন। রবিবার ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই খবর জানিয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর তিন বিভাগের ডিজিএমও (Director General of Military Operations) একটি বিশেষ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, “অপারেশন সিঁদুরে মর্মান্তিকভাবে আমার পাঁচ সহকর্মী সশস্ত্র বাহিনীর ভাই প্রাণ হারিয়েছেন। অসামরিক নাগরিকদের প্রতিও আমি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।”
এই বিশেষ ব্রিফিংয়ে ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই আরও জানান যে, গত ৭ থেকে ১০ মে-র মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কমপক্ষে ৩৫ থেকে ৪০ জন সদস্যকে হারিয়েছে।
রবিবার তিন বাহিনীর ডিজিএমও অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেন। সশস্ত্র বাহিনী আরও জানিয়েছে যে, ভারতের এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানাগুলিকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করা। ভারত এই কাজে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে বলেও জানানো হয়।
ডিজিএমও রাজীব ঘাই বলেন, মোট ৯টি জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। তাতে ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে কান্দাহার হাইজ্যাক এবং পুলওয়ামা হামলায় জড়িত ইউসুফ আজহার, আব্দুল মালিক এবং মুদাসসির আহমেদের মতো কুখ্যাত জঙ্গিরাও রয়েছে।
রাজীব ঘাই আরও বলেছেন যে, সীমান্তের ওপার থেকে পাকিস্তানি গোলাগুলির তীব্র জবাব দিয়েছে ভারত। এই অভিযানের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানের ৩০-৪০ জন সেনা ও অফিসারকে হত্যা করেছে। তিনি জানান, ভারতের পাল্টা আক্রমণ এড়াতে পাকিস্তান অসামরিক বিমানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভারতীয় বাহিনী কোনও অসামরিক বিমানকে লক্ষ্যবস্তু করেনি এবং পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটিগুলিরও ক্ষতি সাধন করেছে।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে, অপারেশন সিঁদুরের অধীনে বাহাওয়ালপুর এবং মুরিদকে সহ গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি আস্তানাগুলিকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজীব ঘাই আরও বলেন, পাকিস্তান ছোট ড্রোন এবং ইউএভি-র মাধ্যমে ভারতীয় সামরিক ঘাঁটি এবং বিমান ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিটি আক্রমণ ব্যর্থ করে দিয়েছে।