
“‘এই অ্যাকাউন্টে ১.৯৫ কোটি টাকা পাঠিয়ে দিন’—এমন একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পেয়ে হায়দরাবাদের একটি সংস্থার অ্যাকাউন্টস অফিসার সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাঠিয়ে দেন। মেসেজটি এসেছিল সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের নামে এবং প্রোফাইলে তাঁর ছবিও ছিল। কিন্তু টাকা পাঠানোর পর জানা গেল, এটি একটি জালিয়াতির ফাঁদ। তবে তেলেঙ্গানা সাইবার ক্রাইম বিভাগের দ্রুত পদক্ষেপে পুরো টাকাটাই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
কীভাবে ঘটল ঘটনা?
হায়দরাবাদের ওই সংস্থার অ্যাকাউন্টস অফিসারের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে, যেখানে একটি প্রজেক্টের অগ্রিম পেমেন্ট হিসেবে ১.৯৫ কোটি টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পাঠাতে বলা হয়। মেসেজটি দেখে মনে হচ্ছিল, এটি সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টরের কাছ থেকে এসেছে। প্রোফাইলে তাঁর ছবি এবং নাম থাকায় অফিসার কোনও সন্দেহ না করেই টাকা ট্রান্সফার করে দেন। কিন্তু পরে জানা যায়, এটি একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো মেসেজ, যা জালিয়াতরা ম্যানেজিং ডিরেক্টরের প্রোফাইলের আদলে তৈরি করেছিল।
দ্রুত প্রতিক্রিয়ায় টাকা ফেরত
টাকা পাঠানোর কিছুক্ষণ পর ব্যাঙ্ক থেকে সংস্থার প্রকৃত ম্যানেজিং ডিরেক্টরের কাছে একটি নোটিফিকেশন যায়। তিনি অ্যাকাউন্টস অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই পুরো ঘটনা স্পষ্ট হয়। ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানান, তিনি কখনও এমন কোনও নির্দেশ দেননি। এরপর দ্রুত তেলেঙ্গানা সাইবার ক্রাইম বিভাগ ও ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সৌভাগ্যবশত, জালিয়াতরা তখনও টাকা নগদে তুলে নেয়নি। ফলে রাত ১টা নাগাদ পুরো ১.৯৫ কোটি টাকা সংস্থার অ্যাকাউন্টে ফেরত আনা সম্ভব হয়।
সাইবার ক্রাইমের ক্রমবর্ধমান হুমকি
গত সপ্তাহেই হায়দরাবাদে এক মহিলার কাছ থেকে স্টক মার্কেটে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে ১ কোটি টাকা লুট করেছিল জালিয়াতরা। এমনকি তারকারাও এই ধরনের সাইবার প্রতারণা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। গত বছর ডিসেম্বরে সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার ৬০ হাজার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত বলে ব্লক করে দিয়েছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে, সাইবার অপরাধীরা কতটা সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পনা করে প্রতারণা চালাচ্ছে।
পুলিশের তৎপরতা
তেলেঙ্গানা সাইবার ক্রাইম বিভাগ জানিয়েছে, ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালের মাধ্যমে লেনদেনটি ট্র্যাক করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জালিয়াতদের ধরতে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “এ ধরনের প্রতারণা রুখতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। কোনও বড় লেনদেনের আগে প্রেরকের পরিচয় যাচাই করা জরুরি।”
এই ঘটনা সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব আরও একবার তুলে ধরেছে। সংস্থাটি এখন তাদের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার পরিকল্পনা করছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন প্রতারণার শিকার হতে না হয়।