
অনলাইন ছবি সংরক্ষণে বিপ্লব আনা গুগল ফটোস তার দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে এক অসাধারণ উপহারের মাধ্যমে। জনপ্রিয় এই ফটো অ্যাপটি তার ব্যবহারকারীদের জন্য নিয়ে এলো দুটি নতুন, শক্তিশালী এআই-চালিত ফিচার – ‘রিইমাজিন’ এবং ‘অটো ফ্রেম’। এতদিন যা শুধু পিক্সেল ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল, সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) ছবি সম্পাদনার জাদু এবার সব অ্যান্ড্রয়েড এবং পর্যায়ক্রমে আইওএস ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে। ছবি ভালো করা নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই, কারণ আপনার পুরোনো ছবিকে নতুন করে চোখ ধাঁধানো করে তুলবে গুগল ফটোসের এই নতুন সংযোজন।
গুগলের দাবি, এই ফিচারগুলো ব্যবহারে ছবির সম্পাদনায় পেশাদারদের মতো নিখুঁত পরিমার্জনা সম্ভব হবে। সবচেয়ে বড় কথা, ব্যবহারকারীর আলাদা কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন পড়বে না – এআই একাই বাকি কাজটা সেরে দেবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে গুগল ফটোস তার ব্যবহারকারীদের আরও উন্নত অভিজ্ঞতা দিতে প্রস্তুত, যেখানে ছবির মান নিয়ে কোনো আপস হবে না।
নতুন রূপে ইন্টারফেস, আরও আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা
নতুন ফিচার যোগ হওয়ার পাশাপাশি, গুগল ফটোসের ইন্টারফেসও এখন আরও আকর্ষণীয় ও ব্যবহারকারী-বান্ধব। স্বয়ংক্রিয় এআই এডিট অপশন থাকায় ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের ছবি উন্নত করতে পারবেন, যা ছবি সম্পাদনার প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত সহজ করে তুলবে।
‘রিইমাজিন’-এর জাদুতে ছবি হবে মনের মতো
‘রিইমাজিন’ ফিচারটি ব্যবহারকারীদের জন্য এক স্বপ্ন পূরণের মতো। এই ফিচারে ব্যবহারকারীকে কেবল সাধারণ ভাষায় নির্দেশ দিলেই হবে। যেমন, যদি কোনো ছবিতে আকাশ মেঘলা থাকে এবং ব্যবহারকারী চান ‘নীল আকাশ’, এআই সঙ্গে সঙ্গে আকাশের রং ও রূপ বদলে দেবে, যেন এক জাদুর ছোঁয়ায়। এভাবে মনের মতো ছবি তৈরি করা যাবে সহজেই, যা আগে কেবল পেশাদার এডিটরদের পক্ষেই সম্ভব ছিল। এটি ছবি সম্পাদনার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
‘অটো ফ্রেম’: নিখুঁত কম্পোজিশনের পথপ্রদর্শক
অন্যদিকে, ‘অটো ফ্রেম’ ফিচারটি ছবির গঠন বা কম্পোজিশন বিশ্লেষণ করে ব্যবহারকারীকে মূল্যবান পরামর্শ দেবে। এটি জানিয়ে দেবে – ছবিটিকে কোথা থেকে ক্রপ করা ভালো হবে, কোথায় একটু বাড়ানো দরকার, বা কোন ফ্রেমে ছবিটা দেখতে সবথেকে ভালো লাগবে। এই ফিচারটি ফটোগ্রাফি সম্পর্কে কম জ্ঞান সম্পন্ন ব্যবহারকারীদেরও পেশাদার মানের কম্পোজিশন পেতে সাহায্য করবে।
গুগল ফটোসের এই দশম বার্ষিকীর উপহার নিশ্চিতভাবে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীর ছবি তোলার এবং সম্পাদনার অভিজ্ঞতাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এআই প্রযুক্তির এই সহজলভ্যতার ফলে ডিজিটাল ফটোগ্রাফির ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।