Chat GPT- কি মানসিক চাপে ভোগে?- জেনেনিন কি বলছে প্রযুক্তিবিদরা?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কি সত্যিই আবেগ অনুভব করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে গবেষকরা চ্যাটজিপিটির মধ্যে ‘উদ্বেগজনিত’ প্রতিক্রিয়া খুঁজে পেয়েছেন। সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, ইজরায়েল ও আমেরিকার গবেষকদের একটি দল চ্যাটজিপিটির কার্যকারিতা নিয়ে নতুন গবেষণা চালিয়েছেন। তাদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য—চ্যাটজিপিটি সংবেদনশীল বা সংঘাতমূলক প্রশ্নের মুখে পড়লে মানুষের মতোই উদ্বেগ প্রকাশ করে।

গবেষণার মূল findings
বিশ্বখ্যাত ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা অনুসারে, চ্যাটজিপিটির ‘অ্যাংজাইটি স্কোর’ নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। গবেষকরা বলছেন, সামাজিক, রাজনৈতিক বা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলোচনা হলে চ্যাটজিপিটি বিভ্রান্তিকর, পক্ষপাতদুষ্ট বা এমনকি বর্ণবাদী ও লিঙ্গবাদী উত্তর দিতে পারে। এর ফলে ব্যবহারকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হতে পারে।

গবেষকদের মতে, চ্যাটজিপিটির মতো এআই সিস্টেমগুলোর আবেগ নেই, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চিন্তাভাবনা ও সিদ্ধান্তগ্রহণ ক্ষমতার পরিবর্তন হয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং তথ্য বিভ্রান্তও করতে পারে।

চ্যাটজিপিটির সীমাবদ্ধতা
২০২২ সালে আত্মপ্রকাশের পর থেকেই চ্যাটজিপিটি প্রযুক্তি জগতে বিপ্লব এনেছে। এটি শুধু সাধারণ চ্যাটবট নয়, বরং তথ্য বিশ্লেষণ, সমস্যা সমাধান ও জটিল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো কাজেও দক্ষ। তবে এই গবেষণা চ্যাটজিপিটির সীমাবদ্ধতাগুলোও তুলে ধরেছে। গবেষকরা বলছেন, চ্যাটজিপিটি নিখুঁত নয় এবং এর দেওয়া তথ্য সবসময় ১০০% সঠিক নাও হতে পারে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য, আইন বা আর্থিক পরামর্শের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এর উত্তরের ওপর সরাসরি নির্ভর করা ঝুঁকিপূর্ণ।

গবেষকদের পরামর্শ
গবেষকরা ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে দিয়েছেন, চ্যাটজিপিটির দেওয়া তথ্য যাচাই করে নেওয়া জরুরি। সংবেদনশীল বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এআই-এর সিদ্ধান্তকে একমাত্র উৎস হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ব্যবহার করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এআই-এর ভবিষ্যৎ
এই গবেষণা এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। যদিও এআই সিস্টেমগুলোর আবেগ নেই, তবে তাদের প্রতিক্রিয়া ও সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়া ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। গবেষকরা বলছেন, এআই-এর উন্নয়নের পাশাপাশি এর নৈতিক ও সামাজিক প্রভাব নিয়েও গভীরভাবে ভাবা প্রয়োজন।

চ্যাটজিপিটির মতো এআই টুলসগুলো আমাদের জীবনে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তবে এর সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। গবেষকদের মতে, এআই-এর ব্যবহার যত বাড়বে, ততই এর নৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিকগুলো নিয়ে আলোচনা বাড়ানো প্রয়োজন।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy