অ্যাপল আবারও প্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বহুল প্রতীক্ষিত iOS 26 অপারেটিং সিস্টেম অবশেষে WWDC 2025 সম্মেলনে উন্মোচন করা হয়েছে, যা অ্যাপলের দাবি অনুযায়ী পূর্বের যেকোনো iOS সংস্করণের চেয়ে বেশি উদ্ভাবনী, ব্যবহারবান্ধব এবং প্রযুক্তিনির্ভর। নতুন এই ওএস স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
iOS 26-এর সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন হলো এর নতুন ডিজাইন ভাষা, যাকে অ্যাপল নাম দিয়েছে ‘লিকুইড গ্লাস’ লুক। অ্যাপ আইকন, উইজেট এবং টাইপোগ্রাফি এখন আরও বেশি ট্রান্সলুসেন্ট (স্বচ্ছ) ও রিফ্লেক্টিভ (প্রতিফলিত)। এই ডিজাইনটি অ্যাপলের VisionOS থেকে অনুপ্রাণিত, যা ব্যবহারকারীদের এক ধরনের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ফিল দেবে। এটি শুধু দেখতেই মনোমুগ্ধকর নয়, ব্যবহারেও নিয়ে আসবে এক আধুনিক ও মসৃণ অভিজ্ঞতা।
শক্তিশালী Apple Intelligence ও ‘লাইভ ট্রান্সলেশন’
iOS 26-এ যুক্ত হয়েছে আরও শক্তিশালী Apple Intelligence। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ফিচারটি হলো ‘লাইভ ট্রান্সলেশন’। এখন থেকে ব্যবহারকারীরা ফোন কল, ফেসটাইম এবং মেসেজিংয়ের সময় রিয়েল-টাইম অনুবাদ পাবেন। অবাক করার মতো বিষয় হলো, এই পুরো প্রক্রিয়াটিই ডিভাইসে সম্পন্ন হবে, ইন্টারনেট ছাড়াই! ফলে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তাও সুরক্ষিত থাকবে।
এছাড়াও, নতুন ‘ভিজ্যুয়াল ইন্টেলিজেন্স’ ফিচারটি ব্যবহারকারীকে স্ক্রিনশট থেকে যেকোনো বস্তুকে চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। যেমন, আপনি একটি স্ক্রিনশট নিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারবেন— “এটা কী?” বা “এটা কোথায় পাওয়া যায়?”।
এক্সিকিউটিভ ব্যবহারকারীদের জন্য একটি দুর্দান্ত সংযোজন হলো কল স্ক্রিনিং। আইফোন এখন নিজে থেকেই বুঝে নিতে পারবে, আসা কলটি ব্যবহারকারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিনা। এরপর ব্যবহারকারী চাইলে কলটি গ্রহণ করবেন নাকি এড়িয়ে যাবেন—সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তার।
অ্যাপগুলোর নতুন রূপ
iOS 26-এ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপের নকশা ও কার্যকারিতায় পরিবর্তন আনা হয়েছে:
ক্যামেরা অ্যাপ এখন আরও হালকা, সরল এবং ফটোগ্রাফি-ফোকাসড হয়েছে, যা ছবি তোলার অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করবে।
ফটোস অ্যাপে যোগ হয়েছে নতুন দুটি ট্যাব— ‘লাইব্রেরি’ ও ‘কালেকশন’, যা ছবি খুঁজে পেতে আরও সহজ করবে।
ম্যাপস অ্যাপ এখন ব্যবহারকারীর ভ্রমণ ইতিহাস ও পছন্দের রুট মনে রাখবে, ফলে পরবর্তী যাত্রায় সময় বাঁচবে।
অ্যাপল এখনও স্পষ্টভাবে জানায়নি কোন কোন আইফোন মডেল iOS 26 আপডেট পাবে। তবে, ধারণা করা হচ্ছে আইফোন ১৩ সিরিজ এবং তার পরবর্তী মডেলগুলো এই আপডেটের আওতায় আসবে। এই নতুন ফিচারগুলো স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন জীবনকে কতটা সহজ করে তোলে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
