Apple-স্টোরে ঢুকে মুখোশধারীদের দেদার লুট, দেখেনিন ভাইরাল ভিডিও

প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে স্বপ্নপুরী লস অ্যাঞ্জেলেস এখন এক বিভীষিকাময় বাস্তবের সাক্ষী। টানা পাঁচ দিন ধরে অস্থিরতা আর বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে এই শহর। সোমবার রাতের চিত্র ছিল আরও ভয়াবহ। শহরের ডাউনটাউন এলাকায় মুখোশধারী বিক্ষোভকারীদের উন্মত্ত তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে একের পর এক নামিদামি দোকান। অ্যাপেল স্টোর থেকে শুরু করে অ্যাডিডাস, ওষুধের দোকান, মারিজুয়ানা ডিসপেন্সারি, এমনকি গয়নার দোকানেও চলে দেদার ভাঙচুর ও লুটপাট। তাক খালি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সব পণ্য, আর অ্যাপেল স্টোরের দেওয়ালে আঁকা হয়েছে গ্রাফিটি – যেন এক বিশৃঙ্খল প্রতিবাদের স্বাক্ষর।

পুলিশ একাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করলেও, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে দোকানের লুটের একাধিক ভিডিও, যা লস অ্যাঞ্জেলেসের বর্তমান চিত্রকে আরও স্পষ্ট করে তুলছে। যদিও এই ভিডিওগুলির সত্যতা bangla.aajtak.in যাচাই করেনি, তবে দৃশ্যে যা দেখা যাচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।

এদিকে, এই লাগামহীন অস্থিরতা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসকে তিনি ‘বিদেশি শত্রু’-দের হাত থেকে রক্ষা করবেনই। তাঁর দাবি, “ক্যালিফোর্নিয়ায় যা ঘটছে তা শান্তি, আইনশৃঙ্খলা এবং দেশের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ। বিদেশি পতাকা হাতে বিক্ষোভকারীরা অশান্তির আবহ তৈরি করছেন।” ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্ফু জারির ঘোষণা করেছে এবং ধাপে ধাপে লস অ্যাঞ্জেলেসে ৪০০০ ন্যাশনাল গার্ড এবং প্রায় ৭০০ মেরিন সেনাকে মোতায়েন করা হয়েছে।

পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে ট্রাম্প ‘বিদ্রোহ আইন’ (Insurrection Act) প্রয়োগ করতেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এই আইন অত্যন্ত বিতর্কিত এবং মার্কিন ইতিহাসে এর ব্যবহার বিরল। এই আইন মার্কিন সেনাবাহিনীকে দেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরাসরি মোতায়েনের অনুমতি দেয়।

প্রেসিডেন্টের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হলেও, বর্তমান পরিস্থিতি এক জটিল প্রশ্ন তৈরি করেছে – এটি কি নিছকই প্রতিবাদ, নাকি নৈরাজ্য এবং লুটপাটের এক ঘৃণ্য প্রদর্শনী? লুটের শিকার হওয়া সাধারণ দোকান মালিকরা দিশেহারা। যখন লস অ্যাঞ্জেলেসের সুউচ্চ অট্টালিকাগুলো থেকে আলো ঝলমলে জীবনযাত্রার স্বপ্ন দেখা যায়, তখন শহরের ডাউনটাউনের রাতের দৃশ্য এই স্বপ্নকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিচ্ছে।

লুটের ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, মুখোশ পরা অসংখ্য মানুষ দোকানের কাঁচ ভেঙে, শাটার সরিয়ে অবাধে প্রবেশ করছে এবং যা খুশি লুটে নিচ্ছে। এই দৃশ্যগুলি তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে মনে করিয়ে দিলেও, এটি স্বয়ং আমেরিকার বুকে, লস অ্যাঞ্জেলেসে ঘটছে – যা বিশ্বের অন্যতম ধনী এবং উন্নত শহর।

এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি কবে নাগাদ নিয়ন্ত্রণে আসে এবং ট্রাম্প প্রশাসন শেষ পর্যন্ত ‘বিদ্রোহ আইন’ প্রয়োগ করে কিনা, সেটাই এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়। লস অ্যাঞ্জেলেসের শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ এখন আমেরিকার সামনে এক কঠিন পরীক্ষা।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy