
প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে জোর গুঞ্জন চলছে যে অ্যাপল তাদের জনপ্রিয় আইফোন সিরিজে এক বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অ্যাপল একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের ‘গ্লাস বা কাঁচের’ আইফোন তৈরিতে কাজ করছে। শুধু তাই নয়, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে স্মার্ট চশমা এবং বাসার সহায়ক রোবটের মতো আরও কিছু অত্যাধুনিক পণ্য বাজারে আনতে পারে কুপার্টিনোভিত্তিক এই টেক জায়ান্ট।
মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এই খবর এমন সময়ে এল যখন ২০২৭ সালে অ্যাপলের পক্ষ থেকে একেবারে নতুন ডিজাইনের আইফোন আসার জোর আলোচনা চলছে।
এর আগে ‘দ্য ইনফরমেশন’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২৭ সালে প্রথমবারের মতো এমন এক আইফোন আসতে পারে অ্যাপল, যার ডিসপ্লে ডিভাইসের একেবারে কিনারা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। দীর্ঘদিন ধরেই গুঞ্জন রয়েছে যে অ্যাপল আইফোন থেকে ‘নচ’ (Notch) বা ডিসপ্লের উপরের কাটা অংশ এবং অন্যান্য কাট-আউট সরিয়ে ফেলতে চায়, যা বর্তমানে সম্পূর্ণ এজ-টু-এজ স্ক্রিন ডিজাইনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রন্ট ক্যামেরার মতো প্রয়োজনীয় উপাদান থাকার কারণে এই কাজটি বেশ কঠিন। এই সমস্যা সমাধানে ক্যামেরা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেন্সর ডিসপ্লের নিচে বসানোর পরিকল্পনা করছে অ্যাপল বলে আগের কিছু প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে ‘বাঁকা’ বা ‘গ্লাস’ আইফোন বলতে ঠিক কী বোঝানো হয়েছে, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। ধারণা করা হচ্ছে, এর মানে হতে পারে যে আইফোনের কাঁচটি পুরো ডিসপ্লেটিকে ঘিরে থাকবে, অর্থাৎ বর্তমানে ব্যবহৃত আইফোনের মতো চ্যাপ্টা পাশ হয়তো নতুন ডিজাইনে থাকবে না।
একই প্রতিবেদনে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ২০২৭ সালে অ্যাপল তাদের প্রথম ফোল্ডএবল (ভাঁজযোগ্য) ফোনও বাজারে আনতে পারে। যদিও এমন ডিভাইস তৈরিতে অ্যাপল কাজ করছে বলে শোনা যাচ্ছে, তবে বর্তমান ফোল্ডএবল প্রযুক্তির অবস্থা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি কিছুটা হতাশ বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৭ সালে অ্যাপল মেটার স্মার্ট চশমার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেদের স্মার্ট চশমাও বাজারে আনতে পারে। এছাড়াও ক্যামেরাযুক্ত এয়ারপডস এবং অ্যাপল ওয়াচের মতো আরও কিছু স্মার্ট ডিভাইসের নতুন সংস্করণও ওই সময়ের মধ্যে আসতে পারে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ওই বছরই অ্যাপলের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত হোম রোবট বাজারে আসার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে, এই রোবটটির একটি নির্দিষ্ট ‘ব্যক্তিত্ব’ থাকবে এবং এটি ঘরের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করতে সক্ষম হবে। ফিজিক্যাল রোবট প্রযুক্তি নিয়ে অ্যাপল যে প্রকাশ্যে কাজ করছে, তার প্রমাণ হিসেবে সম্প্রতি তারা একটি পরীক্ষামূলক রোবটিক ল্যাম্প প্রদর্শন করেছে, যেটি আবেগ প্রকাশের মতো ভঙ্গিতে নড়াচড়া করতে পারে।
যদিও এসব প্রতিবেদন এখনো গুঞ্জন বা সম্ভাবনার স্তরেই রয়েছে এবং অ্যাপলের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে এই খবরগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি পণ্যের বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে অ্যাপল বড় ধরনের উদ্ভাবনের পথে হাঁটছে।