AI-কি প্রাণীদের শব্দকে ভাষায় অনুবাদ করতে পারবে? জেনেনিন কি বলছে প্রযুক্তিবিদেরা?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে প্রাণীদের বিভিন্ন শব্দ, আচরণ এবং শারীরিক সংকেতকে মানুষের ভাষায় অনুবাদ করা সম্ভব কিনা, তা খতিয়ে দেখছে চীনের অন্যতম বৃহত্তম প্রযুক্তি কোম্পানি বাইদু (Baidu)। সংস্থাটি এই সংক্রান্ত একটি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে এবং এর জন্য পেটেন্টের আবেদনও জানিয়েছে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সপ্তাহে প্রকাশিত একটি পেটেন্ট নথি থেকে বাইদু-র এই পরিকল্পনার কথা জানা গেছে।

পেটেন্ট নথি অনুযায়ী, এই সিস্টেমটি প্রাণীদের বিভিন্ন ধরনের ডেটা যেমন তাদের কণ্ঠস্বর বা শব্দ, আচরণ এবং শারীরিক অঙ্গভঙ্গি বা সংকেত সংগ্রহ করবে। এরপর গবেষকরা এসব তথ্যকে একসাথে প্রক্রিয়া করে বিশ্লেষণ করবেন। সবশেষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রাণীদের আবেগের অবস্থান চিহ্নিত করা হবে।

বাইদু নথিতে উল্লেখ করেছে যে, প্রাণীদের মধ্যেকার এসব আবেগ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরবর্তীতে মানুষের ভাষায় অনুবাদ করা যেতে পারে। সংস্থাটি মনে করছে, এই প্রযুক্তি “ভিন্ন প্রজাতির মধ্যে যোগাযোগের নির্ভুলতা ও সক্ষমতা” উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

বাইদু-র একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, এই অনুবাদের বিষয়টি এখনও “গবেষণার পর্যায়ে” রয়েছে। তবে এই পেটেন্ট দাখিল করার পর থেকে প্রযুক্তি জগতে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে “অনেক আগ্রহ” দেখা গিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

স্কাই নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরেই প্রাণীদের ভাষা বোঝার বিষয়টি মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল। তবে প্রযুক্তির সাম্প্রতিক অগ্রগতি এটিকে এখন আরও সম্ভব করে তুলছে। যেমন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়শই এমন ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দেখা যায়, কুকুররা ছয়কোণা বোর্ডে থাকা বোতাম চাপ দিয়ে তাদের মালিকের সঙ্গে যেন যোগাযোগ করছে। এই পদ্ধতিকে ‘অগমেন্টেটিভ অ্যান্ড অল্টারনেটিভ কমিউনিকেশন’ বা এএসি বোর্ড বলা হচ্ছে।

তবে এসব কুকুর আসলেই মানুষের ভাষার মতো করে যোগাযোগ করছে কিনা, তা নিয়ে বিজ্ঞানী মহলে অনেক আলোচনা ও বিতর্ক রয়েছে। এই বিতর্কটির মীমাংসা করার জন্য বর্তমানে ইউসি সান ডিয়েগোর বিজ্ঞানীরা প্রায় দুই হাজার কুকুরকে নিয়ে একটি বিশদ গবেষণা চালাচ্ছেন।

বাইদু-র নতুন এই এআই-নির্ভর পদ্ধতি পোষা প্রাণীদের মনের ভাব বা ভাষা বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। তবে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এখনও এই প্রযুক্তি নিয়ে কিছুটা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ওয়েইবোতে একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, “শুনতে যতই দারুণ লাগুক না কেন, বাস্তবে এটা কেমন কাজ করে সেটাই দেখার বিষয়।” প্রযুক্তিটি বাস্তবে কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় সবাই।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy