
তীব্র গরমে অফিস বা বাড়িতে এসি ব্যবহার এখন দৈনন্দিন জীবনের অংশ। অনেকেই নতুন এসি কেনার কথা ভাবছেন। তবে এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হলো বিদ্যুৎ খরচ, আর এরপরই আসে এসি বিস্ফোরণের আশঙ্কা। বিভিন্ন কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু কিছু সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করলে এই ধরনের বিপদ সহজেই এড়ানো সম্ভব। ছোট ছোট কিছু বিষয় মেনে চললে এসি নিরাপদে ব্যবহার করা যাবে এবং এর আয়ুও বাড়বে।
এসি বিস্ফোরণ এড়াতে যে বিষয়গুলি খেয়াল রাখবেন:
-
ফিল্টার পরিষ্কার রাখা: এসি ব্যবহার শুরু করলে এর ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করা অত্যাবশ্যক। যদি নিজে পরিষ্কার করতে না পারেন, তাহলে পেশাদার এসি মেকানিকের সাহায্য নিন। নোংরা ফিল্টারের কারণে এসির ঠাণ্ডা করার ক্ষমতা কমে যায় এবং এসি অতিরিক্ত গরম (ওভারহিট) হতে শুরু করে। ওভারহিটিংয়ের কারণে এসির কম্প্রেসর ফেটে যেতে পারে, যা বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে। তাই সময়মতো ফিল্টার পরিষ্কার করা খুবই জরুরি।
-
সঠিক তাপমাত্রা সেটিং: ঘরের তাপমাত্রা শিমলার মতো বরফ-শীতল করার প্রয়োজন নেই। আরামদায়ক শীতল পরিবেশ বজায় রাখলেই যথেষ্ট। তাই এসির তাপমাত্রা ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সেট করা উচিত। ২৪ ডিগ্রির কম তাপমাত্রায় এসি চালানো ঠিক নয়। এই তাপমাত্রায় এসি রাখলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় এবং এসির উপর চাপও কম পড়ে। ফলে এসিতে বিস্ফোরণের আশঙ্কাও কমে যায়।
-
নিয়মিত সার্ভিসিং: অতিরিক্ত গরমের সময় দিনে ও রাতে দীর্ঘক্ষণ এসি চলে। এই পরিস্থিতিতে সময়মতো এসি সার্ভিসিং করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিশ্চিত করবে যে এসি সঠিকভাবে কাজ করছে এবং এতে কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি নেই। অনেক সময় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এসিতে আগুন ধরে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
-
সঠিক বায়ু চলাচল (ভেন্টিলেশন): এসি চালানোর সময় ঘরে সঠিক বায়ু চলাচল বজায় রাখা আবশ্যক। যদিও ঘর বেশি খোলামেলা রাখলে ঠাণ্ডা হতে সময় লাগে, তবে ঘরে অতিরিক্ত ঠাসাঠাসি জিনিসপত্র রাখা বা বাতাস চলাচলের পথ বন্ধ করা উচিত নয়। এসির পাশাপাশি ফ্যান চালিয়ে রাখাও জরুরি। এতে ঠাণ্ডা বাতাস পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে, এসির উপর চাপ কমে এবং ঘর দ্রুত ঠাণ্ডা হয়।
-
সরাসরি রোদের তাপ থেকে রক্ষা: যদি এসি এমনভাবে বসানো হয় যে এর উপর সূর্যের আলো সরাসরি পড়ে, তাহলে ঘর ঠাণ্ডা করতে এসিকে বেশি সময় নিতে হয়। সূর্যের তাপের কারণে এসি অতিরিক্ত গরম হতে পারে, যা অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা বাড়ায়। তাই এসির আউটডোর ইউনিট সরাসরি সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করতে হবে।
এছাড়াও, এসির উপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া চলবে না। ঘরে বেশি মানুষ থাকলে এসির উপর চাপ বেশি পড়ে এবং এটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে ব্যবহারকারী এসিকে নিরাপদ এবং টেকসই করে তুলতে পারেন।