AI-যুদ্ধে কি পিছিয়ে পড়ছে মাইক্রোসফট? বিক্রি নেই কো-পাইলটের, কমছে ব্যবহারকারী

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI নিয়ে বিশ্বজুড়ে উন্মাদনা চললেও বাস্তবে কি মুখ থুবড়ে পড়ছে মাইক্রোসফটের উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প? সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইনফরমেশন’-এর এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তাদের ফ্ল্যাগশিপ এআই সফটওয়্যার ‘কো-পাইলট’ (Copilot)-এর বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা বা সেলস টার্গেট এক ধাক্কায় প্রায় ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে মাইক্রোসফট।

বাজারে পিছিয়ে পড়ার আতঙ্ক?

ওপেনএআই (OpenAI)-তে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে প্রথম দিকে দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে থাকলেও এখন বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে মাইক্রোসফট। তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকদের মধ্যে কো-পাইলটের গ্রহণযোগ্যতা আশানুরূপ নয়। বর্তমান বাজারের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে:

  • চ্যাটজিপিটি (ChatGPT): বাজারের সিংহভাগ অর্থাৎ ৬১ শতাংশ একাই নিয়ন্ত্রণ করছে।

  • গুগল জেমিনি (Google Gemini): দ্রুত গতিতে এগিয়ে এসে প্রায় ১৪ শতাংশ বাজার দখল করে নিয়েছে। জেমিনির ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এখন মাইক্রোসফটের ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলছে।

কেন মুখ ফেরাচ্ছেন গ্রাহকরা?

বিশ্লেষকদের মতে, ব্যবহারকারীরা ‘কো-পাইলট’-কে বাস্তব কাজের ক্ষেত্রে খুব একটা কার্যকর মনে করছেন না। সাম্প্রতিক এক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এআই এজেন্টগুলো প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। অর্থাৎ, এগুলো দক্ষ কর্মীর বিকল্প হওয়া তো দূরের কথা, সাধারণ টাস্কেও নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠতে পারেনি। এর ফলে মাইক্রোসফটের বিপুল বিনিয়োগ এখন প্রশ্নের মুখে।

মাইক্রোসফটের পালটা দাবি

এই প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। যদিও মাইক্রোসফট এই দাবিকে পুরোপুরি মেনে নেয়নি। তাদের দাবি, বিক্রয় কোটা কমানোর তথ্যটি ‘বিভ্রান্তিকর’ ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সংস্থাটির মতে, সামগ্রিকভাবে তাদের এআই পণ্যের চাহিদা কমেনি।

ভবিষ্যৎ কী?

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই এখন আর কেবল গালভরা বুলি নয়, বরং বাস্তব উপযোগিতার লড়াই। এই যুদ্ধে টিকে থাকতে হলে মাইক্রোসফটকে তাদের মডেলে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। নতুবা গুগল আর চ্যাটজিপিটির দাপটে মাইক্রোসফটকে দ্বিতীয় সারিতে চলে যেতে হতে পারে।