ওয়াই-ফাই হ্যাকারের থেকে সুরক্ষিত রাখবেন যেভাবে, জেনেনিন ৬টি উপায়

ডিজিটাল যুগে আমাদের ড্রয়িং রুমের কোণায় থাকা ছোট্ট রাউটারটিই এখন সব তথ্যের আধার। অনলাইন ব্যাংকিং থেকে অফিসের কাজ, কিংবা সিসিটিভি ক্যামেরা—সবই চলছে বাড়ির ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। কিন্তু আপনি কি জানেন, সামান্য একটু অসতর্কতায় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও কষ্টার্জিত টাকা পৌঁছে যেতে পারে হ্যাকারদের হাতে?

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু পাসওয়ার্ড দিলেই হবে না, রাউটারের অন্দরে লুকিয়ে থাকা কিছু জরুরি সেটিংস ঠিক রাখা বাধ্যতামূলক। কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন আপনার হোম নেটওয়ার্ক? জেনে নিন বিশেষজ্ঞ পরামর্শ:

১. বদলে ফেলুন নেটওয়ার্কের নাম (SSID)

অধিকাংশ রাউটারে কোম্পানির নাম (যেমন: TP-Link বা D-Link) ডিফল্ট হিসেবে থাকে। এতে হ্যাকাররা সহজেই বুঝে যায় আপনি কোন ডিভাইস ব্যবহার করছেন এবং সেই অনুযায়ী আক্রমণ চালায়। নিজের নাম বা ব্র্যান্ডের নাম বাদ দিয়ে একটি ভিন্নধর্মী নাম সেট করুন।

২. পাসওয়ার্ড হোক ২০ অক্ষরের!

অনেকেই ফোন নম্বর বা জন্মতারিখ দিয়ে পাসওয়ার্ড রাখেন, যা ভাঙা হ্যাকারদের কাছে জলভাত।

  • পরামর্শ: পাসওয়ার্ড অন্তত ২০ অক্ষরের করার চেষ্টা করুন। ছোট-বড় হাতের অক্ষরের সাথে সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন (@, #, $) ব্যবহার করে একে জটিল করে তুলুন।

৩. WPA2 এনক্রিপশন চালু আছে তো?

আপনার রাউটারের তথ্য আদান-প্রদান যদি এনক্রিপ্টেড না হয়, তবে মাঝপথেই তথ্য চুরি হতে পারে। রাউটার সেটআপে গিয়ে চেক করুন WPA2 এনক্রিপশন মোডটি চালু আছে কি না। বর্তমানে এটিই সবচেয়ে নিরাপদ মান।

৪. নেটওয়ার্ককে করে রাখুন ‘অদৃশ্য’

আপনার ওয়াই-ফাই যদি আশপাশের সবার ফোনে দেখা যায়, তবে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি বাড়ে। সেটিংসে গিয়ে ‘SSID Broadcasting’ বন্ধ করে দিন। এতে আপনার নেটওয়ার্ক কেউ দেখতে পাবে না, ম্যানুয়ালি নাম লিখে আপনাকে কানেক্ট করতে হবে।

৫. ফার্মওয়্যার আপডেট ও ফায়ারওয়াল

রাউটার কোম্পানিগুলো নিয়মিত নিরাপত্তা আপডেট পাঠায়। নিয়মিত Firmware Update করুন। এছাড়া রাউটারের ভেতরে থাকা Built-in Firewall অন আছে কি না নিশ্চিত করুন। এটি বাইরের সাইবার আক্রমণ রুখতে ঢাল হিসেবে কাজ করে।

৬. পাবলিক ওয়াই-ফাই ও VPN-এর ব্যবহার

বাইরে কোনো ফ্রি বা পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় অবশ্যই VPN ব্যবহার করুন। এটি আপনার ডাটাকে একটি সুরক্ষিত টানেলের মধ্য দিয়ে পাঠায়, ফলে হ্যাকারদের পক্ষে আড়ি পাতা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

মনে রাখবেন: ইন্টারনেটে আপনার নিরাপত্তা আপনার হাতেই। সামান্য অলসতা আপনার বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। আজই আপনার রাউটারের ড্যাশবোর্ডে লগ-ইন করে সেটিংসগুলো যাচাই করুন।