“ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ে AI -এর ব্যবহার?”-কিশোর-কিশোরীদের জন্য মেটার বড় পরিবর্তন

কিশোর-কিশোরীদের অনলাইনে সুরক্ষিত রাখতে নতুন নীতি গ্রহণ করেছে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট মেটা (Meta)। সম্প্রতি শিশু ও কিশোরদের ওপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দেওয়ায় এই পদক্ষেপ নিয়েছে কোম্পানিটি। কিন্তু মেটার এই উদ্যোগের পরেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক এবং এর কার্যকারিতা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন সেনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটি।

মেটার নতুন নীতি কী?

মেটা জানিয়েছে, এখন থেকে তাদের এআই চ্যাটবট ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের সঙ্গে সীমিত পরিসরে কথা বলবে। চ্যাটবট শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এবং শিক্ষামূলক বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেবে। স্বাস্থ্য, মানসিক চাপ, সম্পর্ক বা ব্যক্তিগত তথ্য সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন এলে বট ব্যবহারকারীকে নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে পাঠাবে অথবা অভিভাবক বা শিক্ষকের সাহায্য নিতে উৎসাহিত করবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিশোর-কিশোরীরা কৌতূহলবশত স্পর্শকাতর বিষয়ে এআই-এর সাহায্য চাইতে পারে। যদি সঠিকভাবে ফিল্টার না করা হয়, তবে তারা ভুল তথ্য পেতে পারে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিভাবক, গবেষক এবং নীতিনির্ধারকরা দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ দিচ্ছিলেন।

কেন শুরু হলো তদন্ত?

মেটার এই নতুন নীতির পরই মার্কিন সেনেট তদন্ত শুরু করেছে। আইনপ্রণেতারা মনে করছেন, মেটার মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কেবল লাভের কথা চিন্তা করে চলতে পারে না; তাদের শিশু-কিশোর ব্যবহারকারীদের সুরক্ষার দায়িত্বও নিতে হবে। তদন্তের মূল লক্ষ্য হলো মেটার নতুন নীতি বাস্তবে কতটা কার্যকর এবং শিশুদের জন্য অনলাইন নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত করছে, তা খতিয়ে দেখা।

সেনেট সদস্যরা বিশেষভাবে জানতে চাইছেন:

  • মেটা কীভাবে ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই করছে?
  • কিশোর-কিশোরীদের জন্য কন্টেন্ট ফিল্টার কীভাবে কার্যকর হচ্ছে?
  • এআই সিস্টেমে শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য কতটা সুরক্ষিত?

শিশু অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো বলছে, শুধু নীতি পরিবর্তনই যথেষ্ট নয়। তারা চায়, মেটা যেন নিয়মিত রিপোর্ট প্রকাশ করে এবং শিশুদের সুরক্ষার জন্য একটি স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষণ সংস্থা গঠন করা হয়।

মেটার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা চাই কিশোর-কিশোরীরা নিরাপদে প্রযুক্তি ব্যবহার করুক। আমাদের এআই চ্যাটবট এখন থেকে ব্যক্তিগত বা স্পর্শকাতর কোনো বিষয়ে পরামর্শ দেবে না, বরং নির্ভরযোগ্য উৎসে তথ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, কিশোরদের অনলাইন নিরাপত্তা এখন বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে শিশুদের সুরক্ষায় নতুন আইন ও বিধিনিষেধ আরোপের দাবি উঠছে। তাই মেটার এই নতুন নীতি কেবল একটি কোম্পানির পদক্ষেপ নয়, বরং পুরো প্রযুক্তি খাতের জন্যই একটি বড় বার্তা।