Science: মঙ্গলে সৌরশক্তি চালিত ছোট নভোযান পাঠানো সম্ভব হবে? জেনেনিন কী বলছে বিজ্ঞানীরা?

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এবং মহাকাশ অনুসন্ধানে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। বিজ্ঞানীরা এমন এক ক্ষুদ্র ও সৌরশক্তিচালিত উড়ুক্কু যন্ত্র তৈরি করেছেন, যা জ্বালানি ছাড়াই শুধুমাত্র সূর্যের আলো ব্যবহার করে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। এই উদ্ভাবন জলবায়ু পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ অনুসন্ধানেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ক্ষুদ্র নভোযানগুলো ‘ফোটোফোরেসিস’ নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি গ্রহণ করে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো বস্তুর এক পৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে অন্য পৃষ্ঠের তুলনায় কম ঘনত্বের বাতাস তৈরি করা হয়, যা বস্তুটিকে উপরে ভাসিয়ে রাখতে সাহায্য করে। গত দেড়শ বছর ধরে এই পদ্ধতিটি জানা থাকলেও, এটি শুধুমাত্র ছোট বস্তু বা শক্তিশালী কৃত্রিম আলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
তবে পেন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এবার প্রাকৃতিক সূর্যের আলো ব্যবহার করে এই প্রযুক্তিকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। তারা ১ সেন্টিমিটার দীর্ঘ, পাতলা ও ছিদ্রযুক্ত শিট দিয়ে এমন একটি উড়ুক্কু যন্ত্র তৈরি করেছেন যা প্রাকৃতিক আলোতেই ভেসে থাকতে পারে। এই যন্ত্রটি দুটি পাতলা স্তরের সমন্বয়ে গঠিত, যা ছোট সংযোগ কাঠামোর মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।
কীভাবে এই প্রযুক্তি কাজ করবে?
গবেষকরা মনে করছেন, এই যন্ত্রগুলোর আকার সামান্য বড় করা গেলে এতে অ্যান্টেনা এবং সার্কিট বসানো যাবে। এর ফলে, এগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের তাপমাত্রা, চাপ, রাসায়নিক গঠন এবং বাতাসের গতিবিধি সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। এই ধরনের তথ্য জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত গবেষণার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভবিষ্যতে, এই একই প্রযুক্তি মঙ্গল গ্রহেও ব্যবহার করা যেতে পারে। বর্তমানে মঙ্গল গ্রহে স্যাটেলাইট পাঠানো অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কিন্তু এই ক্ষুদ্র নভোযানগুলো তুলনামূলকভাবে কম খরচে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণে সাহায্য করতে পারে।
এ গবেষণার লেখক ইগর বারগাটিন বলেছেন, “এই প্রযুক্তি যদি সফল হয়, তবে আগামী দশকের মধ্যে আমরা মেসোস্ফিয়ারের মতো দুর্গম অঞ্চল থেকে উচ্চ মানের তথ্য সংগ্রহ করতে পারব।” ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত ‘ফটোফোরেটিক ফ্লাইট অফ পারফরটেড স্ট্রাকচার ইন নিয়ার-স্পেস কন্ডিশন’ নামক গবেষণাপত্রটিতে এই উদ্ভাবন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।