চিকিৎসায় এবার AI-এর ব্যবহার চালু করলো সৌদি আরব, চালু হলো বিশ্বের প্রথম ক্লিনিক

চিকিৎসার ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল সৌদি আরব। বিশ্বে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর একটি আধুনিক ক্লিনিক চালু হয়েছে, যেখানে রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেবে এআই ডাক্তার ‘ডক্টর হুয়া’। এই যুগান্তকারী পদক্ষেপটি গ্রহণ করেছে সৌদি আরবের আলমুসা গোষ্ঠী, যার প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে চীনের এআই প্রতিষ্ঠান সিন-ই।

এই বিশেষ এআই ক্লিনিকে রোগীরা আগে থেকে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময়ে যেতে পারবেন, ফলে লম্বা লাইনে দাঁড়ানো বা দীর্ঘ অপেক্ষার ক্লান্তি থাকবে না। রোগী ক্লিনিকে পৌঁছানোর পর এআই চিকিৎসক ‘ডক্টর হুয়া’ তার প্রাথমিক পরীক্ষা শুরু করবে। রোগীর সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে এআই চিকিৎসক সমস্যার ধরন বুঝে নেবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবে। এরপর সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে এআই ডাক্তার একটি প্রেসক্রিপশন তৈরি করবে, যা চূড়ান্তভাবে একজন রক্তমাংসের চিকিৎসক যাচাই ও অনুমোদন দেবেন।

যদিও এআই এই ক্লিনিকের মূল চালিকা শক্তি, তবু সম্পূর্ণভাবে মানুষের উপর নির্ভরশীলতা একেবারে বাদ দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তা ও মানের কথা মাথায় রেখে রক্তমাংসের চিকিৎসকরা প্রতিটি ধাপ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এছাড়াও, ক্লিনিক পরিচালনার জন্য নিরাপত্তাকর্মীসহ একাধিক জনবল থাকছে। এই পরিষেবা বর্তমানে শুধুমাত্র আউটডোর চিকিৎসার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। জরুরি বিভাগে এখনো এআই ব্যবহার করা হচ্ছে না, কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, জটিল ও তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে এআই পুরোপুরি সক্ষম নয়।

ভাষা একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হলেও, নির্মাতাদের দাবি, এই এআই চিকিৎসককে বহু ভাষায় দক্ষ করে তোলা হয়েছে। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের রোগীদের সেবায় কোনো বাধা থাকবে না। সিন-ই এর সিইও ঝ্যাং শাওদিয়ান বলেন, “এতদিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ডাক্তারদের সহকারী ছিল। এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপরই চিকিৎসার দায়িত্ব দিচ্ছি।”

এই পুরো প্রকল্পটি ১৮ মাসের একটি পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে চালু হয়েছে। এটি কতটা সফল হবে এবং এর নির্ভরযোগ্যতা কতটা প্রমাণিত হবে, তা জানতে সময়ের অপেক্ষা। তবে, নিঃসন্দেহে এটি চিকিৎসা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি সাহসী এবং অগ্রগামী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।