যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় অনলাইন খুচরা বিক্রেতা অ্যামাজন (Amazon) ও ওয়ালমার্টের (Walmart) জন্য ভারতের ১২ হাজার পাঁচশ কোটি ডলারের বিশাল ই-কমার্স বাজারে পুরো প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এই চাপ যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য চুক্তির বিস্তৃত আলোচনার অংশ হিসেবেই দেওয়া হতে পারে।

মঙ্গলবার এ শিল্পের শীর্ষ কর্মকর্তা, লবিয়িস্ট ও মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে ফাইনানশল টাইমস (Financial Times) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে। ফাইনানশল টাইমস জানিয়েছে, খাবার থেকে শুরু করে গাড়ি পর্যন্ত বিভিন্ন খাতকে অন্তর্ভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য চুক্তির বিস্তৃত আলোচনা চলছে। এই আলোচনার মধ্যেই ই-কমার্স খাতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য সমান সুযোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারকে চাপ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ফাইনানশল টাইমসের প্রতিবেদনে ভারত সরকারের কাছ থেকে ট্রাম্প প্রশাসন কী ধরনের নির্দিষ্ট পদক্ষেপ আশা করে তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।

অন্যদিকে রয়টার্স (Reuters) লিখেছে, অ্যামাজন ও ওয়ালমার্ট বর্তমানে ভারতে তাদের স্থানীয় বিভিন্ন ইউনিটের মাধ্যমে কাজ করে। তবে পণ্য মজুত রাখা এবং তা সরাসরি গ্রাহকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে তারা কিছু ভারতীয় বিধিনিষেধের সম্মুখীন হয়। যেখানে রিলায়েন্সের মতো ভারতীয় বিভিন্ন দেশীয় কোম্পানি তাদের বিশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে দেশজুড়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য দোকান খোলার পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মও ব্যবহার করতে পারে। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি অ্যামাজন ও ওয়ালমার্ট।

রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে আরও লিখেছে, মার্কিন শুল্ক এড়াতে নয়াদিল্লির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র এক বাণিজ্য চুক্তি করার মাঝখানে রয়েছে। সম্প্রতি সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও দেখা করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। কারণ ভারতের ওপর চাপানো অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছেন ট্রাম্প। এই বিরতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ইতিবাচক বাণিজ্য চুক্তির আশা করছেন নয়াদিল্লির কর্মকর্তারা।

সব মিলিয়ে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা যখন চলছে, তখন ভারতীয় ই-কমার্স বাজারে অ্যামাজন ও ওয়ালমার্টের মতো মার্কিন কোম্পানিগুলোর প্রবেশাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এ বিষয়ে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই চাপ আগামী দিনে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কে কী প্রভাব ফেলে, সেটাই দেখার বিষয়।