মানুষের মস্তিষ্কে ব্লাইন্ডসাইট যন্ত্র বসাবে ইলন মাস্কের নিউরালিংক, নেওয়া হলো উদ্যোগ

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষের জীবনে নতুন আশা জাগিয়ে তুলেছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন নিউরালিংক। প্রতিষ্ঠানটি মানুষের মস্তিষ্কে বসানোর উপযোগী একটি অত্যাধুনিক যন্ত্র তৈরি করেছে, যা অন্ধদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে। এই যুগান্তকারী উদ্ভাবনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্লাইন্ডসাইট’।
ইতিমধ্যেই, নিউরালিংক যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের মস্তিষ্কে এই ক্ষুদ্রাকৃতির যন্ত্রটি বসানোর অনুমতি পেয়েছে। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রথমবারের মতো মানুষের মস্তিষ্কে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ব্লাইন্ডসাইট’ স্থাপন করা হবে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইলন মাস্ক এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই বছরের শেষ দিকেই প্রথমবার কোনো মানুষের মস্তিষ্কে এই নতুন প্রযুক্তি স্থাপন করা হবে, যা সম্পূর্ণ অন্ধ ব্যক্তিদেরও দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনবে। প্রাথমিকভাবে যন্ত্রটির মাধ্যমে কম রেজ্যুলেশনের দৃশ্য দেখা গেলেও, সময়ের সাথে সাথে এই প্রযুক্তির আরও উন্নতি ঘটবে। মাস্ক আশাবাদী, একসময় ‘ব্লাইন্ডসাইট’ মানুষের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির চেয়েও উন্নত হতে পারে। গত কয়েক বছর ধরে বানরের ওপর এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইতিবাচক এবং আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়া গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
নিউরালিংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘ব্লাইন্ডসাইট’ মূলত মাইক্রোইলেকট্রোড দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম যন্ত্র। এটি মস্তিষ্কের ভিজ্যুয়াল কর্টেক্সে স্থাপন করা হবে। যন্ত্রটি একটি ক্যামেরার মাধ্যমে দৃশ্য ধারণ করবে এবং সেই তথ্য মস্তিষ্কের নিউরনের মাধ্যমে অন্ধ ব্যক্তিদের ‘দেখতে’ সাহায্য করবে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ‘ব্লাইন্ডসাইট’ ব্যবহারের মাধ্যমে সেই ব্যক্তিরাও দেখতে সক্ষম হবেন যাদের দুটি চোখ এবং অপটিক নার্ভ সম্পূর্ণভাবে অকেজো হয়ে গেছে। এ বিষয়ে ইলন মাস্ক তার খুদে ব্লগ সাইট এক্সে (টুইটার) একটি পোস্টে উল্লেখ করেছেন, এমনকি যারা জন্ম থেকেই অন্ধ, তারাও এই প্রযুক্তির সাহায্যে প্রথমবারের মতো আলো দেখতে পারবেন।
এই যুগান্তকারী আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় এটি এক বিশাল পরিবর্তন আনতে পারে।