“ফেসবুক একটি পচে যাওয়া কর্মসংস্কৃতির জায়গা”- ফেসবুকের বিরুদ্ধে তথ্য চুরি ও দুর্নীতির অভিযোগ!

ফেসবুকের প্রাক্তন উচ্চপদস্থ কর্মী সারা উইন উইলিয়ামস প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তার নতুন বই ‘কেয়ারলেস পিপল: এ কশনারি টেল অফ পাওয়ার, গ্রিড অ্যান্ড লস্ট আইডিওলিজম’-এ তিনি দাবি করেছেন, ফেসবুকের শীর্ষকর্তারা চীনের সঙ্গে গোপনে তথ্য ভাগ করেছেন, কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন এবং নারীদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে।

সারা উইন উইলিয়ামস, যিনি ফেসবুকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন, তার বইতে ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্কৃতিকে ‘পচে যাওয়া’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকারবার্গ চীনে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য সেখানকার কমিউনিস্ট সরকারের শর্ত মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলেন। এমনকি মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটকে না জানিয়েই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সারার মতে, চীনকে ফেসবুকের সার্ভার অ্যাক্সেস দেওয়া হয়েছিল, যা ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

সারার আরও অভিযোগ, ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্কৃতি অত্যন্ত বিষাক্ত। কর্মীদের ইচ্ছেমতো ছাঁটাই করা হতো এবং নারীদের প্রতি অসদাচরণ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। তিনি দাবি করেছেন, ফেসবুকের দুই শীর্ষকর্তা, সিইও মার্ক জুকারবার্গ এবং প্রাক্তন সিওও শার্ল স্যান্ডবার্গ, নিজেদের স্বার্থে নিয়মিত দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন।

তার বইতে সারা লিখেছেন, “ফেসবুক একটি পচে যাওয়া কর্মসংস্কৃতির জায়গা, যেখানে নৈতিকতা কোনো গুরুত্ব পায় না।” তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে শীর্ষ পর্যায়ে দুর্নীতি এবং নৈতিকতার অভাব ছিল, যা প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেটা (মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড) জানিয়েছে, তারা এই বইটি এখনও পড়েনি। তবে মেটার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে সারাকে ফেসবুক থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল এবং তদন্তে প্রমাণিত হয়েছিল যে তিনি মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন।

সারার এই বই এবং অভিযোগ ফেসবুকের বিরুদ্ধে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির গোপনীয়তা নীতি, কর্মসংস্কৃতি এবং নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনা ফেসবুকের ভাবমূর্তির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকের ভবিষ্যৎ কী দিকে মোড় নেয়, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এই ঘটনা প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্কৃতি এবং নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা নিয়ে নতুন করে ভাবনার সুযোগ তৈরি করেছে।