News

স্মার্টফোন আসক্তি কমাবে যেসব অ্যাপ, জেনেনিয়ে আজই শুরু করতে পারেন ব্যবহার

বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন যেন আমাদের নিত্যসঙ্গী। এক মুহূর্তও এটি ছাড়া কাটে না অনেকের। ফোন স্ক্রোল করতে গিয়ে সময়মতো অফিসের প্রজেক্ট জমা দিতে না পারা বা বসের বকা খাওয়া এখন এক সাধারণ ঘটনা। শুধু বড়রাই নন, ছোটরাও স্মার্টফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে, যার ফলে লেখাপড়া ও অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবেও ফোন আসক্তিকে দায়ী করা হয়।

তবে চাইলেই অনেকে এই স্মার্টফোন আসক্তি কমাতে পারছেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, একাধারে ফোন ব্যবহার বিষণ্নতার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও একাকিত্ব এবং ঘুমের সমস্যা অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের অন্যতম কুফল। কিন্তু জানেন কি, আপনার স্মার্টফোনেরই কিছু অ্যাপ এই আসক্তি কমাতে দারুণ সাহায্য করতে পারে? চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই অ্যাপগুলো সম্পর্কে:

১. মিস্টিকলঞ্চ (MysticLaunch): কম স্ক্রিন টাইমের স্মার্ট সমাধান

অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য এটি একটি কার্যকর অ্যাপ। মিস্টিকলঞ্চ ব্যবহার করলে আপনার হোম স্ক্রিনে কেবল অত্যাবশ্যকীয় ও প্রয়োজনীয় কয়েকটি অ্যাপই দেখা যাবে। এর ফলে ব্যস্ত সময়ে চাইলেও বিনোদনমূলক অ্যাপগুলো আপনার হাতের কাছে সহজে মিলবে না। এতে সময় বাঁচবে এবং স্ক্রিন টাইমও কমবে। সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এই অ্যাপটি একদম বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।

২. ফরেস্ট (Forest): কাজের মনোযোগ বাড়াতে গাছ লাগান

ফরেস্ট হলো একটি টাইম ট্র্যাকিং অ্যাপ, যা খেলার ছলে আপনার মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। ধরুন, আপনি কোনো কাজে মনোনিবেশ করতে চাইছেন। এই অ্যাপে একটি ভার্চুয়াল গাছ রোপণ করুন। যতক্ষণ এই অ্যাপটি আপনার ফোনে চালু থাকবে, ততক্ষণ গাছটি বড় হতে থাকবে। কিন্তু যদি আপনি অ্যাপ থেকে বেরিয়ে গিয়ে অন্য কোনো অ্যাপ ব্যবহার করেন, তাহলে গাছটি মরে যাবে। ফলে আপনাকে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। অর্থাৎ, ফরেস্ট চালু করা থাকলে আপনি চাইলেও অন্য অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন না। এই অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি কয়েনও জিততে পারবেন, যা দিয়ে বাস্তবে গাছ কেনা যাবে। তাই যারা গাছপালা ভালোবাসেন, স্ক্রিন টাইম কমানোর জন্য এটি একটি চমৎকার উপায়।

৩. অ্যাপ ডিটক্স (AppDetox): নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্লক করুন

অ্যাপ ডিটক্স আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যেকোনো অ্যাপ ব্লক করার সুবিধা দেয়। যদি আপনি চান কোনো নির্দিষ্ট অ্যাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে, তাহলে সেটিকে ব্লক করে দিন। আপনার ইচ্ছে হলে পরে আবার আনব্লক করে ব্যবহার করতে পারবেন। এই পদ্ধতিটি ফোন ব্যবহারের অভ্যাস খানিকটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করবে।

৪. হেডস্পেস (Headspace): মানসিক শান্তির জন্য মেডিটেশন

এটি একটি জনপ্রিয় মেডিটেশন অ্যাপ। দিনভর সোশ্যাল মিডিয়ার নানা রকম কন্টেন্ট দেখে যদি আপনি ক্লান্ত বা মানসিকভাবে চাপ অনুভব করেন, তাহলে হেডস্পেস আপনাকে মুক্তি দিতে পারে। এই অ্যাপের নিয়মিত ব্যবহারে মানসিক চাপ কমে এবং সৃজনশীলতা বাড়ে। এটি মনকে শান্ত রাখতে ও ফোকাস বাড়াতে দারুণ কার্যকর।

৫. রিফোকাস (ReFocus): আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য কড়া নিয়ম

রিফোকাস অ্যাপটি বিশেষভাবে আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি। ধরুন, আপনি না চাইতেও বারবার কিছু নির্দিষ্ট অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন। এই অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি সেগুলোকে ব্লক করে দিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, যা একবার ব্লক করবেন, তা চাইলেই কিন্তু আনব্লক করতে পারবেন না। তাই যে অ্যাপ বা ওয়েবসাইটগুলো আপনার কাছে সত্যিই অপ্রয়োজনীয় বা যা আপনার জীবন থেকে সরাতে চান, সেগুলোকে ব্লক করার জন্য এই অ্যাপটি ব্যবহার করা উচিত।

এই অ্যাপগুলো সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে স্মার্টফোন আসক্তি কমানো এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করা সম্ভব। সুস্থ ও উৎপাদনশীল জীবন যাপনে ডিজিটাল অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা আজ খুবই জরুরি।

Exit mobile version