মার্কিন নির্বাচনের আগে বিটকয়েনের দাম বাড়ছে যে কারণে? জেনেনিন বিস্তারিত

সম্প্রতি বিটকয়েনের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ক্রিপ্টো শিল্পের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ সপ্তাহে বিটকয়েনের দাম গত তিন মাসের হিসাবে সবচেয়ে বেশি। গেল মঙ্গলবার বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্রিপ্টোমুদ্রাটির দাম বেড়ে গিয়েছিল ৬৬ হাজার ডলারের ওপর, যা গত বছরের একই সময়ের হিসাবে দ্বিগুণের বেশি। তবে, বছরের শুরুতে নিজের সর্বোচ্চ দামের চেয়ে মাত্র কয়েক হাজার ডলার পিছিয়ে ছিল ক্রিপ্টোমুদ্রাটি।

বিটকয়েনের দামে সাম্প্রতিক এ উথানের দুই মাস আগেও স্রেফ কয়েক দিনের ব্যবধানে এর দাম কমে গিয়েছিল ২০ শতাংশেরও বেশি।

মার্কিন নির্বাচন শুরু হতে মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি থাকলেও বাজার বিশ্লেষক ও এই খাতের শীর্ষ ব্যক্তিদের কেউ কেউ আশা করছেন, নির্বাচনে দুই শীর্ষ প্রার্থীর যেই জিতুন না কেন, বিটকয়েনের দাম বাড়বে।

“ডনাল্ড ট্রাম্প ক্রিপ্টো খাতকে আপন করে নিয়েছেন, যেখানে তিনি সবার সামনে নিজেকে একজন ক্রিপ্টোপন্থী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছেন,” ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন অলাভজনক সংস্থা ‘ইথেরিয়াম ফাউন্ডেশন’র পর্ষদ সদস্য ডেভিড বেন কে।

“তিনি বেশ কয়েকটি ক্রিপ্টোবান্ধব নীতিমালা উত্থাপন করেছেন। যেমন- একটি জাতীয় বিটকয়েন সংরাক্ষাণাগার তৈরি এবং কোনো ডিজিটাল মুদ্রার বিকাশে ফেডারেল রিজার্ভের হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। ট্রাম্পের এ মন্তব্যে ক্রিপ্টো সমর্থক ও ক্রিপ্টোদাতাদের জন্য রিপাবলিকান দলের এক বিস্তৃত পরিকল্পনার প্রতিফলন দেখা গেছে।”

ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে অবশ্য ক্রিপ্টো খাত নিয়ে ট্রাম্পের চেয়ে কম সোচ্চার দেখা গেছে। তবে, তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের তুলনায় ক্রিপ্টো খাতের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল থাকবেন তিনি।

সোমবার এক প্রচারণায় যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস বলেন, তিনি এমন একটি ‘অর্থনৈতিক সুযোগ’ তৈরি করবেন, যা নিয়ন্ত্রক সংশ্লিষ্ট জটিলতার বিপরীতে ক্রিপ্টো মালিকদের সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

গবেষণা সংস্থা ‘কনজিউমার ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউট’র তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের একজনের কাছে একটি বা তার চেয়ে বেশি ক্রিপ্টোমুদ্রা আছে। মার্কিন শীর্ষ কোনো নির্বাচনে এবারই প্রথম এ খাতকে এতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

“হ্যারিস এখনও ক্রিপ্টোর পক্ষে পাকাপোক্ত অবস্থান নেননি। তবে, এই খাতে সম্পৃক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তার অকপট থাকার বিষয়টি থেকে ইঙ্গিত মেলে, তার অবস্থান বদলে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে, যা খুবই ইতিবাচক বিষয়,” বলেন কে।

বিটকয়েনের দামে সাম্প্রতিক এ উত্থানে এর বাজারমূল্য গিয়ে ঠেকেছে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলারে। ফলে, বিশ্বের সেরা ১০ মূল্যবান সম্পদের তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছে ক্রিপ্টোমুদ্রাটি।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy