নিজের পরিচয় আর অবস্থান আড়াল করে নিরাপদের ইন্টারনেট ব্রাউজ করার অন্যতম সহজ পন্থা হচ্ছে ভিপিএন ব্যবহার করা। তবে, শীর্ষ এক সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি বলছে, এই ভিপিএন-এর নাম দিয়ে অ্যাপ স্টোর থেকে অনেক সময়ই ছড়াচ্ছে ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার।
বিশ্বব্যাপী ‘ফ্রি ভিপিএন’ অ্যাপের ব্যবহার চলতি বছরের দ্বিতীয় অংশের তুলনায় আড়াইগুণ বেড়েছে বলে জানা গেছে ক্যাসপারস্কির এক গবেষণায়। এসব ‘ফ্রি ভিপিএন’ এর অধিকাংশই ছিলো ম্যালওয়ার, যেগুলো মূলত ব্যবহার করত হ্যাকাররা। কোম্পানিটি বলছে, বছরের শেষে এসেও এর ব্যবহার বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে।
ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক)-এর ব্যবহার মূলত ব্যবহারকারীর আইপি ঠিকানা লুকিয়ে প্রাইভেসি রক্ষা করা এবং ব্লক করা কনটেন্ট অ্যাক্সেস করার ক্ষেত্রে। তবে, গবেষণা বলছে, সাইবার অপরাধীরা ফ্রি ভিপিএন অ্যাপ ব্যবহার করে বড় বড় বটনেট তৈরি করছে। ২০২৪ সালের মে মাসে ৯১১ এস৫ নামের এমন একটি বিশাল বটনেট বন্ধ করে দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা এফবিআই।
রাশিয়াভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানিটি বলছে, বন্ধ করে দেওয়া ওই বটনেটে ব্যবহৃত হচ্ছিল ‘মাস্কভিপিএন’ এবং ‘সাইনভিপিএন’ এর মতো ফ্রি ভিপিএন অ্যাপ। ব্যবহারকারীদের না জানিয়েই এসব অ্যাপ তাদের ডিভাইসকে প্রক্সি সার্ভারে পরিণত করত। এরপর এগুলো ব্যবহৃত হয়েছে সাইবার আক্রমণ, প্রতারণা ও অর্থপাচারে।
বিশাল এই বটনেটটি ১৯০টিরও বেশি দেশে ১ কোটি ৯০ লাখ আইপি ঠিকানা ব্যবহার করেছে।
ক্যাসপারস্কি বলছে, এসব ফ্রি ভিপিএন ব্যবহার করলে সুরক্ষার বদলে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে হতে পারে।
ক্যাসপারস্কির নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ভাসিলি কোলেসনিকভ বলছেন, “অনেকেই মনে করেন, যদি কোনো ভিপিএন অ্যাপ অফিসিয়াল স্টোর যেমন গুগল প্লে’তে পাওয়া যায়, তবে সেটি নিরাপদ এবং সহজেই তাদের লোকেশনে ব্লক করা কনটেন্ট আনলক করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর যদি এটি ফ্রি হয়, তবে আরও ভালো।”
“কিন্তু এটি প্রায়ই ফাঁদ হয়ে দাঁড়ায়। সাম্প্রতিক ঘটনা এবং আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ক্ষতিকর ভিপিএন অ্যাপের সংখ্যা বাড়ছে।”
সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের এই ধরনের হুমকি সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত এবং বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত ভিপিএন সার্ভিসের পাশাপাশি একটি সিকিউরিটি স্যলিউশন ব্যবহার করা উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছে কোম্পানিটি।