ডনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জিতে যাচ্ছেন, তা স্পষ্ট হওয়ার পর থেকেই দাম বাড়তে শুরু করেছে বিটকয়েনের।
যুক্তরাষ্ট্রের সবগুলো সুইং স্টেটে জেতা রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্রিপ্টোমুদ্রা বিটকয়েনের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।
এর ফলে, নিজের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিটকয়েনের দাম ৭৫ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। আর এতে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করেছে ট্রাম্প নির্বাচিত হলে তিনি যে ক্রিপ্টো খাতকে সমর্থন করবেন, ওই প্রতিশ্রুতি।
অগাস্টের পর থেকে বিটকয়েনের দাম হয়েছে দেড়গুণ, যখন বিভিন্ন জরিপে কমলা হ্যারিসের চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন ট্রাম্প।
ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হ্যারিসও গত মাসে ক্রিপ্টো খাত নিয়ে বলেছেন, তিনি এমন এক ‘অর্থনৈতিক সুযোগ’ তৈরি করবেন, যা ক্রিপ্টো মালিকদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সংশ্লিষ্ট জটিলতা থেকে সুরক্ষা দেবে। কিন্তু এই খাতের অনেক হাই-প্রোফাইল ব্যক্তি ট্রাম্পের পক্ষেই ছিলেন, যিনি এ বিষয়ে হ্যারিসের চেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন।
ট্রাম্প এবারের নির্বাচনে নিজেকে ক্রিপ্টোপন্থী প্রার্থী হিসেবে প্রচার করেছিলেন, যদিও এর আগে ক্ষমতায় থাকার সময় বিটকয়েনকে তিনি ‘ডলারের বিপরীতে স্ক্যাম’ বলে আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি দাবি করেন, এর দাম নির্ধারিত হয় ‘স্রেফ অনুমানের ভিত্তিতে’।
জুলাই মাসে ন্যাশভিল শহরে আয়োজিত ‘বিটকয়েন ২০২৪’ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি একটি বিটকয়েনের কোষাগার গড়ে তুলবেন, যেখানে অপরাধীদের কাছ থেকে সরকারের বাজেয়াপ্ত করা অর্থ জমা পড়বে।
“দীর্ঘ সময় ধরেই আমাদের সরকার ওই নীতি লঙ্ঘন করে আসছে, যা প্রত্যেক বিটকয়েন মালিকের জানা। তা হল, কখনও নিজের বিটকয়েন বিক্রি না করা,” বলেন তিনি।
বুধবার বিটকয়েনের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে কাজ করেছে রিপাবলিকান দলের সিনেট নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা, যার ফলে ট্রাম্প প্রশাসন সহজেই সেইসব নতুন নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে পারবে, যেগুলো কার্যকর করার দাবি করেছেন তিনি।
“বিটকয়েন কোষাগার তৈরির এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একেবারে কাছাকাছি। বিটকয়েনের এই সাফল্যের পেছনে একাধিক বিষয় কাজ করলেও এর দামে সাম্প্রতিক উত্থান ঘটেছে ট্রাম্পের নিজেকে প্রাথমিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করার বিষয়টি। আর এটি এ বাজারের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরে,” বলেছেন আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি ‘কয়েনকর্নার’-এর প্রধান নির্বাহী ড্যানি স্কট।
এদিকে, বিস্তৃত ক্রিপ্টো বাজারেও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বড় উত্থান দেখা গেছে, যেখানে এ খাতের সামগ্রিক বাজারমূল্যে যোগ হয়েছে ২৫ হাজার কোটি ডলার। এতে করে জুলাইয়ের পর থেকে প্রথমবারের মতো এই খাতের বাজারমূল্য দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।