এয়ার কুলারে ঘর ঠান্ডা না হলে যা করবেন, জেনেনিন কিছু সহজ উপায়

তীব্র গরম থেকে বাঁচতে এসির বিকল্প হিসেবে অনেকেই এয়ার কুলার ব্যবহার করেন। এসি কেনার বা চালানোর খরচ বেশি হওয়ায় কম বাজেট এবং সুবিধা অনুযায়ী কুলার গরমে বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে যেখানে এসি ব্যবহার করা সম্ভব নয় বা অতিরিক্ত ব্যয়বহুল, সেখানে এয়ার কুলার ভালো সমাধান দেয়। তবে অনেক সময় অভিযোগ থাকে যে, কুলার চললেও তেমন ঠান্ডা বাতাস পাওয়া যায় না।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি আপনার এয়ার কুলারের ঠান্ডা করার ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে নিতে পারেন। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অবলম্বনে রইল তেমন ৭টি কার্যকরী টিপস:

১. পানীয় জলের স্তর যাচাই করুন: কুলারের ঠান্ডা করার প্রক্রিয়া জলের উপর নির্ভরশীল। কুলারের ভেতরের জল কুলিং প্যাডকে ভিজিয়ে রাখে এবং সেই ভেজা প্যাডের মধ্যে দিয়ে যখন বাতাস প্রবাহিত হয়, তখন তা ঠান্ডা হয়ে বাইরে আসে। তাই কুলারের রিজার্ভারে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। জল একেবারে শুকিয়ে গেলে কুলার কেবল গরম বাতাসই ছাড়বে। ঠান্ডা ভাব আরও বাড়াতে চাইলে সাধারণ জলের বদলে ঠান্ডা জল বা বরফ ব্যবহার করতে পারেন।

২. কুলিং প্যাড পরিষ্কার ও সচল রাখুন: কুলিং প্যাড হল কুলারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দীর্ঘ ব্যবহারের ফলে এতে ধুলা-ময়লা জমে যেতে পারে বা ফাঙ্গাস পড়তে পারে, যার ফলে বাতাস ঠান্ডা হওয়ার প্রক্রিয়া বাধা পায়। তাই মাসে অন্তত একবার কুলিং প্যাড খুলে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। যদি প্যাডটি অনেক পুরোনো, শক্ত হয়ে যায় বা নষ্ট হতে শুরু করে, তবে ভালো কার্যক্ষমতার জন্য সেটি পরিবর্তন করাই শ্রেয়।

৩. ফ্যান ও ব্লোয়ারের যত্ন নিন: কুলারের ফ্যান বা ব্লোয়ার বাতাস টেনে কুলিং প্যাডের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত করে। ময়লা বা ধুলো জমে গেলে ফ্যানের গতি কমে যায় এবং তা সঠিকভাবে বাতাস সরবরাহ করতে পারে না। এজন্য ফ্যান ব্লেড বা ব্লোয়ার নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি। ফ্যান ঘুরতে যদি কোনো অস্বাভাবিক শব্দ হয় বা ঘুরতে অসুবিধা হয়, তাহলে সামান্য লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করে ঘর্ষণ কমাতে পারেন।

৪. সঠিক অবস্থানে কুলার স্থাপন করুন: কুলার বসানোর জায়গা তার কার্যকারিতার উপর বড় প্রভাব ফেলে। যদি কুলার এমন জায়গায় রাখা হয় যেখানে বাইরে থেকে গরম বাতাস সরাসরি প্রবেশ করছে, তবে ঠান্ডা করার ক্ষমতা কমে যাবে। কুলারকে সবসময় এমন জায়গায় রাখুন যেখানে বাইরে থেকে ঠান্ডা বা তুলনামূলক কম গরম বাতাস প্রবেশ করতে পারে, যেমন জানালার পাশে। জানালার পাশে রাখলে এটি বাইরের বাতাস টেনে নিয়ে ভেতরের বাতাসকে ঠান্ডা করতে আরও ভালোভাবে কাজ করবে।

৫. বরফ ব্যবহার করুন: অনেক এয়ার কুলারে বরফ রাখার জন্য আলাদা কম্পার্টমেন্ট বা ট্রে থাকে। না থাকলেও আপনি সরাসরি জলের রিজার্ভারে জলের সঙ্গে কিছু বরফ যোগ করতে পারেন। এটি কুলিং প্যাডকে আরও ঠান্ডা করবে এবং তাৎক্ষণিক শীতল বাতাস পেতে সাহায্য করবে।

৬. ঘরের বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন: এয়ার কুলার ‘ইভাপোরেটিভ কুলিং’ বা বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করে। এই প্রক্রিয়ার জন্য ঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল থাকা জরুরি। ঘরের দরজা-জানালা একেবারে বন্ধ না রেখে কিছুটা ফাঁক রাখুন যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে এবং ভেতরের আর্দ্র বাতাস বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে। এতে কুলার আরও ভালোভাবে কাজ করে।

৭. বিদ্যুৎ ভোল্টেজ ঠিক আছে কি না দেখুন: কম বা অস্থির বিদ্যুৎ ভোল্টেজের কারণে কুলারের মোটরের কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে, যা ঠান্ডা বাতাস সরবরাহে প্রভাব ফেলে। নিশ্চিত করুন আপনার কুলার সঠিক ভোল্টেজ পাচ্ছে। প্রয়োজনে একটি ভালো মানের ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করতে পারেন, যা কুলারের মোটরকে সঠিক ভোল্টেজ সরবরাহ করে তার কার্যকারিতা বজায় রাখবে।

এই সহজ টিপসগুলি মেনে চললে গরমকালে আপনার এয়ার কুলার থেকে আপনি এসি-র মতো আরামদায়ক ঠান্ডা বাতাস পেতে পারেন এবং গরম থেকে মুক্তি লাভ করতে পারেন।

(সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া)

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy