“ইন্টারনেটে ডিপফেইকের পরিমাণ বেড়েছে ৫৫০ শতাংশ”-অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা চাইছে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার সুপরিচিত কয়েকজন নারীর ডিপফেক ছবি পর্ন সাইটে পোস্ট করার অভিযোগে এক ব্যক্তির ওপর সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার জরিমানা আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। অ্যান্থনি রোটোনডোর নামের ওই ব্যক্তি যদি এই অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত হন, তবে এটি হবে এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ সাজা।

অ্যান্থনি রোটোনডো ‘সুপরিচিত অস্ট্রেলিয়ান নারীদের’ ডিপফেক পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটে পোস্ট করেছিলেন। আদালত সেই ছবিগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেও তিনি তা মানেননি, যার জেরে তাকে ইতিমধ্যেই আদালত অবমাননার অপরাধে অর্থদণ্ড দিয়েছে। এখন ডিপফেক ছবি পর্ন সাইটে পোস্ট করার অপরাধে রোটোনডোর বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা শুরু করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ইসেইফটি কমিশনার।

রোটোনডো ফিলিপিন্সে থাকাকালীন আদালতের এই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেছিলেন। তবে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার পর তার বিরুদ্ধে এই মামলা শুরু করা হয়। ভুক্তভোগী নারীদের নাম দেশটির ফেডারেল আদালত গোপন রেখেছে বলে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান জানিয়েছে।

রোটোনডো ‘মিস্টারডিপফেইকস’ নামের একটি ওয়েবসাইটে এসব ছবি পোস্ট করেছিলেন, যা দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আদালতে তিনি স্বীকার করেন যে, এসব ছবি সাইট থেকে না সরিয়ে তিনি আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করেছেন। পরবর্তীতে, আদালতের কাছে নিজের পাসওয়ার্ড শেয়ার করেছিলেন তিনি, যাতে এসব ডিপফেক ছবি মুছে ফেলা যায়।

ইসেইফটি কমিশনারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, অনলাইন সুরক্ষা আইন ভঙ্গের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ৪ লাখ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার জরিমানা চাইছে। এই আইনে এটিই সর্বোচ্চ সাজা। মুখপাত্র বলেছেন, এই জরিমানায় “আইন ভঙ্গের গুরুত্ব ও ডিপফেইকের শিকার নারীদের ওপর পড়া বড় প্রভাবকে বিবেচনা করা হয়েছে”। তাঁরা আরও বলেছেন, “এই মোটা অংকের জরিমানা অন্যদের এই ধরনের ক্ষতিকর কাজ থেকে দূরে রাখবে।”

ইসেইফটি অফিস জানিয়েছে, সম্মতি ছাড়াই স্পষ্ট ডিপফেক ছবি তৈরি ও তা শেয়ার করার কারণে ভুক্তভোগীরা অনেক মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছেন। সোমবার এই জরিমানা নির্ধারণের শুনানি হয়েছে এবং আদালত এখনও রায় জানায়নি।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে স্পষ্ট ডিপফেক ঠেকানোর জন্য অস্ট্রেলিয়া ফেডারেল ফৌজদারি আইন পাশ করেছে। ওই সময় বিল পর্যালোচনা করা সেনেট কমিটিকে ইসেইফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট বলেছেন, ২০১৯ সালের পর থেকে ইন্টারনেটে ডিপফেইকের সংখ্যা ৫৫০ শতাংশ বেড়েছে। এসব ডিপফেইকের ৯৯ শতাংশই ছিল পর্নোগ্রাফিক ভিডিও, যার ৯৯ শতাংশ ছবি ছিল নারী ও মেয়েদের।

ইনম্যান গ্রান্ট বলেছেন, “ডিপফেক ছবি দিয়ে হয়রানির পরিমাণ বাড়ছে এবং এর শিকার বেশি হন নারীরা।” এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ অনলাইন স্পেসে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy