ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর অটোমেশনের পথে আরও এক বিশাল ধাপ এগিয়ে গেল। সংস্থাটি এখন তাদের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহার এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, সেই রোবটের সংখ্যা এক মিলিয়ন বা ১০ লক্ষের গণ্ডি পেরিয়ে গেছে। বিশ্বজুড়ে অ্যামাজনের প্রায় ৩০০ ফেসিলিটি সেন্টারে ‘ডিপফ্লিট’ নামের জেনারেটিভ এআই মডেলের মাধ্যমে পরিচালিত এই রোবটগুলো নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা দিচ্ছে।
কর্মী ছাঁটাইয়ের আবহে রোবোটিক্সের বাড়বাড়ন্ত:
গত কয়েক মাস ধরে বিশ্বের প্রথম সারির বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা বড় সংখ্যায় কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছে। অটোমেশন নির্ভরতা বৃদ্ধিই এর অন্যতম প্রধান কারণ। অ্যামাজনের সিইও অ্যান্ডি জ্যাসির মুখেও কর্মী ছাঁটাই এবং অটোমেশন বৃদ্ধির কথা শোনা গিয়েছিল। রোবটের ব্যবহার অ্যামাজনে ২০১২ সাল থেকে শুরু হলেও, সাম্প্রতিককালে এর সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে, যা এখন ১০ লক্ষের মাইলফলক ছুঁয়েছে।
অ্যামাজ়ন বিশ্বের বৃহত্তম মোবাইল রোবোটিক্স অপারেটর:
অ্যামাজ়ন রোবোটিক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট স্কট ড্রেসার জানিয়েছেন, অ্যামাজ়ন এখন বিশ্বের বৃহত্তম মোবাইল রোবোটিক্সের ম্যানুফ্যাকচারার এবং অপারেটর হিসেবে নিজের জায়গা তৈরি করেছে। তিনি আরও জানান, ‘ডিপফ্লিট’ এআই মডেলের মাধ্যমে এই সমস্ত রোবটগুলি বিভিন্ন ফেসিলিটি সেন্টারে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এই রোবটগুলো ডেলিভারির কাজও করছে, যার ফলে ডেলিভারি প্রক্রিয়া আরও মসৃণ ও দ্রুত পরিচালিত হচ্ছে বলে অ্যামাজ়ন দাবি করেছে।
অ্যামাজন দ্বারা ব্যবহৃত এই রোবটগুলি প্রায় ১২৫০ পাউন্ড (প্রায় ৫৬৭ কেজি) পর্যন্ত ভার বহনে সক্ষম।
কর্মী বনাম রোবট: ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের চিত্র?
ড্রেসার অবশ্য জানিয়েছেন যে, এই রোবটগুলি কর্মীদের পাশাপাশি কাজ করছে। মূলত, পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ এবং ভার বহনের মতো শ্রমসাধ্য কাজগুলো এই রোবটগুলি বেশি করছে। তবে, রোবটগুলো পূর্ণমাত্রায় কাজ শুরু করায় অ্যামাজনের অভ্যন্তরে কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা আরও তীব্র হচ্ছে।
যদিও অ্যামাজ়ন এই ছাঁটাইয়ের বিষয়ে এখনই কিছু জানায়নি, ই-কমার্স জায়ান্টটি জানিয়েছে যে, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং রক্ষণাবেক্ষণের মতো বিভাগে আগামীতে ৩০ শতাংশ কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন পড়বে। এই ঘটনা প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। একদিকে যেমন প্রযুক্তি সংস্থাগুলো দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যয় সংকোচনের জন্য অটোমেশনের দিকে ঝুঁকছে, অন্যদিকে এটি মানবশ্রমের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।