বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি হিসেবে অবস্থান হারিয়েছে প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। তার পরিবর্তে শীর্ষস্থান দখল করেছে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আরামকো। আরামকো প্রায় দুই বছর পর অ্যাপলের কাছ থেকে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা অ্যাপলের শেয়ার কেন বিক্রি করে দিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, অ্যাপলের শেয়ারদর কমতে থাকায় বিনিয়োগকারীরা অ্যাপলের চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বিনিয়োগ করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এদিকে, বিটকয়েনসহ অন্যান্য প্রধান ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ডিজিটাল অ্যাসেটের শেয়ারেরও তীব্র দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার নিউইয়র্কে অ্যাপলের শেয়ার ৫ শতাংশের বেশি কমেছে। এর ফলে স্টক মার্কেটে অ্যাপলের শেয়ারের মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৭০ বিলিয়ন ডলার। বিপরীতে আরামকোর শেয়ারের নিট মূল্য প্রায় ২ হাজার ৪২০ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের পর এই প্রথম আবারও শীর্ষস্থানে উঠে এল আরামকো। অপরিশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছর জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের মূল্য বেড়েছে।
এদিকে স্টক বিক্রি বন্ধের পর বছরের শুরু থেকে অ্যাপলের শেয়ারের মূল্য প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। বিগত ৪০ বছরের মধ্যে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি বেশি বেশি উচ্চতায় থাকার কারণে এই মূল্যহ্রাস ঘটেছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। এর আগে জানুয়ারিতে অ্যাপল প্রথম কোম্পানি হিসেবে স্টক মার্কেটে শেয়ারের মূল্য ৩ হাজার বিলিয়ন ডলার অর্জন করে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোভিড মহামারির সময় লকডাউন চলাকালীন বিশ্বের বৃহত্তম প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সে সময় মাত্র ১৬ মাসের মধ্যেই স্টক মার্কেটে শেয়ারের মূল্য ২ হাজার বিলিয়ন ডলার থেকে ৩ হাজার বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়।
তবে মহামারির পর দেশগুলো অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চালু করায় ২০২১ সাল থেকে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং এ বছর ইউক্রেনের যুদ্ধ জ্বালানির দাম আরও বৃদ্ধির দিকে ঠেলে দিয়েছে। আর জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে লাভবান হয়েছে আরামকো।
গত বছরের নভেম্বরে বিটকয়েনের শেয়ারের মূল্য সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছার পর বিশ্বের বৃহত্তম ও সর্বাধিক পরিচিত ক্রিপ্টোকারেন্সি এখন পর্যন্ত তার শেয়ার মূল্যের প্রায় ৬০ শতাংশ হারিয়েছে। ইথার, ইথেরিয়াম ব্লক চেইন নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ডিজিটাল মুদ্রাগুলোর দামও তীব্রভাবে পড়ে গেছে।