ইন্টারনেটের কল্যাণে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তেই থাকুন না কেন হাতের স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যে কোনো স্থানের খবর জানা যায়। কখনো কিছু জানতে ইচ্ছে হলে তার উত্তরও পাওয়া যায় ইন্টারনেটে।
তবে ইন্টারনেটে অপব্যবহারের ফলে অনেকেই বিপদে পড়ছেন নানাভাবে। বিশেষ করে শিশুরা। শিশুদের অবাধে ইন্টারনেট ব্যবহারে জড়িয়ে পড়ছে কোনো অপরাধ কিংবা অবৈধ কার্যকলাপে।
আজ ৮ ফেব্রুয়ারি সারাবিশ্বে পালিত হচ্ছে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার দিবস। মূলত সাইবার অপরাধ, অনলাইনে হয়রানি, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে নিরাপত্তা, শিশুদের ক্ষতিকর ইন্টারনেট থেকে সুরক্ষা, কিশোর ও যুবসমাজকে দায়িত্বসম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবহারে উৎসাহিত করা, পরিচ্ছন্ন ইন্টারনেট প্লাটফর্ম তৈরি করতে বিশ্বজুড়ে এ দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন-
> অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজার কিংবা অন্যান্য সফটওয়্যার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপডেট করতে হবে। এই আপডেট কয়েকদিন পরপর করুন। অন্যদিকে অপারেটিং সিস্টেম কিংবা অন্যান্য অ্যাপকে অটো আপডেট দিয়ে রাখলে সেটা খুব কার্যকর হয়।
> সবসময় নিরাপদ থাকতে অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। যদিও সব ধরনের নিরাপত্তা অ্যান্টি-ভাইরাস দিতে সক্ষম নয়। তারপরও শতকরা ৯০ শতাংশ হুমকি মোকাবেলার সক্ষমতা এর রয়েছে। তাই আপনি কিছু অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে অ্যান্টি-ভাইরাস কিনে নিতে পারেন কিংবা ইন্টারনেট থেকে বিনামূল্যে ইনস্টল করতে পারেন।
> আপনার নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় হুমকি আপনি নিজেই। কেননা আপনাকে বোকা বানানোর মাধ্যমেই কিংবা আপনার ভুলের কারণেই অনেক সময় সাইবার আক্রমণকারী আপনার ই-মেইল চুরি করতে পারে।
আপনি যদি কোনো বাজে সাইটে আপনার মেইল এবং পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে প্রবেশ করেন তবে আক্রমণকারীরা আপনার সম্পর্কে তথ্য পেয়ে যায়। তারপর সেগুলোর সাহায্যে তারা আপনার অ্যাকাউন্ট চুরি করে এবং অন্যদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
> সাইবার অপরাধীরা নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টির জন্য ব্যবহারকারীদেরকে বিভিন্ন বিষয় পাঠিয়ে থাকে। যেমন বিভিন্ন ধরনের ফাইল, লিংক ইত্যাদি। আর এগুলো ওপেন করার সঙ্গে সঙ্গেই একজন ব্যবহারকারীর কম্পিউটার ভাইরাসের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়।
তাই কোনো ই-মেইলের প্রেরক যদি আপনার পরিচিত না হয় তবে তা ওপেন না করে ডিলিট করে দিতে হবে। আর প্রেরক যদি পরিচিতও হয়ে থাকে তারপরও খুব ভালোভাবে নিশ্চিত না হয়ে এ ধরনের লিংক কিংবা ফাইল ওপেন না করাই ভালো।
> ইন্টারনেটের এই যুগে একজন মা কিংবা বাবাকে ইন্টারনেটের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই আচরণ করতে হয়। সন্তানদের ইন্টারনেটের খারাপ দিক থেকে রক্ষা করতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন।
২০১২ সাল থেকে শুরু হয় নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার দিবস। বিশ্বব্যাপী সাইবার আইনজীবীরা ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় মঙ্গলবার এ দিবসটি পালন করে আসছেন।
বর্তমানে বিশ্বের ২০০টি দেশে দিবসটি পালিত হয়। আর এই দিবসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে শিশুদেরকে যে কোনো ধরনের ক্ষতি থেকে বাইরে রাখা।
২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেফবর্ডারস প্রকল্পের অংশ হিসেবে নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস প্রথম পালন করে। ২০০৫ সাল থেকে দিবসটি পালন করছে ইনসেফ নেটওয়ার্ক।
২০০৯ সাল থেকে ইউরোপের গণ্ডি পেরিয়ে দিবসটি পালন করা শুরু করে অন্যান্য দেশও। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে বর্তমানে বাংলাদেশেও পালন করা হচ্ছে নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস ২০২২।