
বর্ষা তার পুরো শক্তি নিয়ে হাজির! বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সক্রিয় নিম্নচাপের প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে একটানা ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে নিম্নচাপটি উত্তর-পূর্ব ঝাড়খণ্ড এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর অবস্থান করছে, যা উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ প্রভাব ফেলবে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এই নিম্নচাপের সঙ্গে সংযুক্ত ঘূর্ণাবর্তটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭.৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এর দক্ষিণমুখী হেলে থাকার কারণে সমুদ্র ক্রমশ উত্তাল হয়ে উঠছে। বিশেষ করে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে সমুদ্রের পরিস্থিতি অত্যন্ত প্রতিকূল থাকতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মৎস্যজীবীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সমুদ্রে যেতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিম দিকে সরবে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাবে আজ, বৃহস্পতিবার, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মুর্শিদাবাদ জেলাতেও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
রাজধানী কলকাতা এবং তার আশপাশের এলাকাতেও আগামী ৪৮ ঘণ্টা বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। যদিও আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টির তীব্রতায় কিছুটা বিরতি দেখা গেলেও, শুক্রবার থেকে তা আবার বাড়তে পারে।
উত্তরবঙ্গেও সতর্কতা:
শুধু দক্ষিণবঙ্গ নয়, ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে উত্তরবঙ্গেও। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ির জন্য জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। এছাড়াও উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদা জেলাতেও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা মঙ্গলবার পর্যন্ত চলতে পারে।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা:
আগামী ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার উপকূলে ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নীচু এলাকার বাসিন্দাদের জল জমার বিষয়ে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া সংক্রান্ত যেকোনো আপডেটের জন্য আবহাওয়া দফতরের বুলেটিনে নজর রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।