লাই ডিটেক্টরের কথা নিশ্চয়ই জানেন। এটি বেশি ব্যবহার হয় আসামির ক্ষেত্রে। আসামি সত্যি বলছেন নাকি মিথ্যা তা যাচাই করে এই মেশিন। এবার উটাহ ভিত্তিক এক প্রযুক্তি সংস্থা কনভেরাস সম্প্রতি টেকনোলজি ভিত্তিক সিস্টেম তৈরি করেছে যা চোখের সামান্য নড়াচড়ার মাধ্যমেই সত্যি বা মিথ্যা যাচাই করতে সক্ষম।
এই টেকনোলজির সাহায্যে মাত্র ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই ব্যক্তির অনিচ্ছা থাকলেও লেন্সে ক্যাপচার করে সত্যি বা মিথ্যা শনাক্ত করা যাবে। তবে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নতুন নয়। পলিগ্রাফ টেস্টটি বেশ কিছু সময় ধরেই মিথ্যা কথা, হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ ইত্যাদি শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সংস্থার দাবি, তাদের আইডাইরেক্ট টেকনোলজি মিথ্যা শনাক্ত করতে ৮৬ থেকে ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে সক্ষম। ডেসার্ট নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী, কনভেরাসের এই নতুন টেকটি আইডিটেক্ট এবং আইডিটেক্ট+ নামে দুটি সিস্টেম ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তির সত্যি-মিথ্যা যাচাই করতে সক্ষম।
এরই মধ্যে এই সিস্টেমের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তাকে ধরা হয়েছে। এই প্রযুক্তিটি ব্যবহারের জন্য, প্রথমে বেশ কিছু প্রশ্নসহ একটি লিস্ট কম্পিউটারে ইনপুট করা হয়। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন সেট করার আগে থেকেই উত্তর লেখা থাকে সত্য বা মিথ্যা।
এবার এই টেকটি একটি ইনফ্রারেড আই-ট্র্যাকিং ক্যামেরা ব্যবহার করে অনিচ্ছাকৃত চোখের নড়াচড়া যেমন পিউপিল ডায়ামিটার, ফিক্সেশন এবং ব্লিঙ্কের পরিবর্তন রেকর্ড করে। তারপর তা বিশ্লেষণও করে। একবার লেন্সের নড়াচড়া রেকর্ড করা হলে, ওই প্রোগ্রামটি সত্য বা মিথ্যা শনাক্ত করে দশ মিনিটেরও কম সময়ে প্রোগ্রাম প্রসেসিং করে।
সিস্টেমটিতে দু’ধরনের পরীক্ষা হয়, একটি ডাইরেক্টেড লাই কমপারিজন টেস্ট, যা ১৫ মিনিট সময় নেয় এবং মাল্টি-ইস্যু কমপারিজন টেস্ট যা ৩০ মিনিটের মতো সময় নেয়।
সাধারণত ডাইরেক্টেড লাই কমপারিজন টেস্টে অনেক বেশি প্রাথমিক প্রশ্নোত্তর থাকে। অন্যদিকে মাল্টি-ইস্যু কমপারিজন টেস্টে লেন্সের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারে সামঞ্জস্যতাও টেস্ট করা হয়-ফৌজদারি মামলা বা দেওয়ানি মামলায় এই ধরনের টেস্ট ব্যবহৃত হয়। পলিগ্রাফ পরীক্ষায় যেখানে ৩ ঘণ্টা থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লাগে, সেখানে এই টেস্ট মাত্র ১০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে স্বচ্ছতার সঙ্গে একই কাজ সম্পাদনে অধিকতর সক্ষম বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।
সূত্র: বিজনেস স্টান্ডার্ট