
বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে আজ, বৃহস্পতিবার, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিহারাদের জন্য নতুন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে ১৬ই জুন থেকে এবং চলবে ১৪ই জুলাই পর্যন্ত। তবে, এই পরীক্ষার সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট আন্দোলনরত চাকরিহারারা, যারা সরাসরি নিয়োগের দাবিতে অনড়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী ২০শে নভেম্বর থেকে কাউন্সেলিং শুরু হবে। পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গেই ওএমআর শিট আপলোড করা হবে, যা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কমিশনের একটি বড় পদক্ষেপ।
নিয়োগ বিধিতে বড়সড় পরিবর্তন
পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে ২৯শে মে মধ্যরাতে এসএসসি নিয়োগ বিধিতে বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন বিধি অনুসারে, নম্বর বিভাজনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বদল এসেছে:
- লিখিত পরীক্ষা: লিখিত পরীক্ষার নম্বর ৫৫ থেকে বাড়িয়ে ৬০ করা হয়েছে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর সর্বোচ্চ ১০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৩৫ নম্বর।
- মৌখিক সাক্ষাৎকার: মৌখিক সাক্ষাৎকারে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
- শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা: শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকলে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর দেওয়া হবে।
- লেকচার ডেমোনস্ট্রেশন: ‘লেকচার ডেমোনস্ট্রেশন’ বা ক্লাস নেওয়ার দক্ষতার জন্য সর্বোচ্চ ১০ নম্বর রাখা হয়েছে।
নতুন বিধিতে একাডেমিক পারফরম্যান্সের গুরুত্ব কমানো হয়েছে। আগে পড়াশোনার ফলাফলের গুরুত্ব ছিল ৩৫ শতাংশ, যা এখন কমে হয়েছে ১০ শতাংশ। এর ফলে, যদি কোনও প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার নম্বর কম থাকে, কিন্তু তিনি পড়ানোর দক্ষতা বা ডেমোনস্ট্রেশনে ভালো ফল করেন, তাহলে তাঁর চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
বয়সসীমা ও প্যানেলের মেয়াদ
২০২৫ সালের ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রার্থীরা নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীরাও এই বয়সসীমার আওতায় পড়বেন।
প্যানেল এবং ওয়েটিং লিস্টের মেয়াদ প্রথম কাউন্সেলিংয়ের পর থেকে এক বছর পর্যন্ত থাকবে। রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়ে এই মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো যেতে পারে।
ওএমআর শিট সংরক্ষণ ও উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ
২০১৬ সালের এসএসসি বাতিলের পর ওএমআর শিট নিয়ে বড় পরিবর্তন এনেছে কমিশন। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর লিখিত পরীক্ষার ওএমআর শিট দু’বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে, এরপর সেগুলো নষ্ট করা যেতে পারে। তবে, ওএমআর শিটের স্ক্যান করা কপি প্যানেলের মেয়াদ শেষের পর ১০ বছর পর্যন্ত সংরক্ষিত রাখতে হবে।
নতুন বিধিতে উচ্চ প্রাথমিকের (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম) শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে। এখানে আগের মতোই টেট পাশ বাধ্যতামূলক রাখা হয়েছে। টেটের প্রাপ্ত নম্বরের সর্বোচ্চ গুরুত্ব থাকবে ৪০ নম্বরের। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে ২৫ নম্বরের এবং ইন্টারভিউয়ের জন্য ১৫ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে।