শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রম সিংহে শনিবার দুপুরে টুইট করে জানিয়েছেন যে তিনি ইস্তফা দেবেন। আর তারপরেই তার বাড়ি উত্তেজিত জনতা ঘিরে ফেলেন। বাড়িতে ঢোকার সময় নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে খন্ড যুদ্ধ বেঁধে যায় দেহরক্ষীদের।
আর তারপরেই দেখা যায় তার সরকারি বাসভবনে বিক্ষোভ কারীরা প্রবেশ করে সোফায় ঘুমোচ্ছেন ও কেউ স্নান করছেন। পাশাপাশি ব্যাবহার করা হচ্ছে রান্না ঘর ও জিমের সরঞ্জাম। ইতিমধ্যে সেই সমস্ত ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কলম্বোতে বিক্ষোভের মুখে নিজ বাসভবন ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসে। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রবেশ করেছে বিক্ষোভকারীরা।
শনিবার (৯ জুলাই) দেশটির স্থানীয় সময় সকালে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট অন্যত্র সরে যান। আর প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পলায়নের খবর এলেও প্রতিরক্ষা বিভাগের একটি সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্টকে নিরাপত্তার জন্য সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, বিক্ষুদ্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেন নিরাপত্তাকর্মীরা। কিন্তু তাদের রোধ করা যায়নি।
এ বিক্ষোভকে চলতি বছরের সবচেয়ে বড় আন্দোলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ প্রেসিডেন্টের বাসভবনের দিকে যাচ্ছিল। তারা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিচ্ছিল।
ভঙ্গুর অর্থনীতি এবং জ্বালানির তীব্র সংকটের মধ্যে শ্রীলংকায় সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ বৃদ্ধি পাচ্ছিল দিন দিন। সপ্তাহখানেক হলো জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দেয়।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে দিশেহারা শ্রীলংকার মানুষ। দেশটিতে জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম বিরাজ করছে। সংকট নিরসনে ব্যর্থতার অভিযোগে দেশটিতে সরকারের বিরুদ্ধে চলতি বছরের শুরু থেকেই চলছে বিক্ষোভ–প্রতিবাদ। মাঝে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কয়েক দফার ব্যাপক সংঘর্ষে অনেকেই নিহত হন। এসব বিক্ষোভ থামাতে কয়েক দফা জারি করা হয় কারফিউ।
সরকারবিরোধী তুমুল বিক্ষোভে গতকাল উত্তাল ছিল কলম্বো। উত্তাল এ বিক্ষোভ ঠেকাতে শুক্রবারও কারফিউ জারি করা হয়। দেশটির হাজারো ছাত্র–জনতা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ ও দ্রুত অর্থনৈতিক সংকটের লাগাম টানার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। শনিবারও বড় বিক্ষোভ হওয়ার কথা ছিল। বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রবেশের ফলে ভবন ছাড়েন গোতাবায়া।