
হেডিংলি টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম ইনিংসের ফিল্ডিং যেন এক দুঃস্বপ্নের মতো। একের পর এক সহজ ক্যাচ ফেলে দিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটাররা শুধু সমালোচনার মুখে পড়েননি, রীতিমতো লজ্জার রেকর্ডও গড়েছেন। স্বয়ং ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকার ভারতীয় ফিল্ডারদের এই ‘পিচ্ছিল হাতের’ তীব্র সমালোচনা করেছেন। তার মতে, এতগুলো ক্যাচ ফসকে না গেলে জসপ্রীত বুমরাহর নামের পাশে ৫টি নয়, ৯টি উইকেট শোভা পেতো!
প্রথম ইনিংসে ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ সিতাংশু কোটাকও ফিল্ডিং নিয়ে উদ্বেগ গোপন করেননি। আর এই বাজে ফিল্ডিংয়ের সবচেয়ে বড় খেসারত দিতে হয়েছে জসপ্রীত বুমরাহকে। বুমরাহর বলেই ভারতীয় ফিল্ডাররা একাই চারটি ক্যাচ ফেলেছেন! এর মধ্যে যশস্বী জয়সওয়াল একাই তিনটি ক্যাচ ফেলে বুমরাহকে ৯ উইকেট পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছেন। এমনকি রবীন্দ্র জাদেজার মতো তুখোড় ফিল্ডারও একটি ক্যাচ ফস্কান। টেস্ট ক্রিকেটের এক ইনিংসে কোনো ভারতীয় বোলারের বলে এতগুলো ক্যাচ পড়ার ঘটনা এর আগে ঘটেনি, যা এক লজ্জার রেকর্ড তৈরি করেছে।
শুধু বুমরাহর বলের ক্যাচ নয়, যশস্বী জয়সওয়াল নিজেই এক ইনিংসে তিনটি ক্যাচ ফেলে টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ ফেলার ভারতীয় রেকর্ড গড়েছেন। যদিও রিশাভ পন্ত এই ম্যাচে ১৫০টি ক্যাচ ধরার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন, তবে তিনিও একটি ক্যাচ ফেলেছিলেন। এছাড়া শার্দুল ঠাকুরও ক্যাচ ফস্কান।
ভারতীয় ফিল্ডারদের এই বেহাল দশার সম্পূর্ণ সুবিধা নিয়েছে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ক্যাচ তুলে জীবন পান অলি পোপ, যিনি শেষ পর্যন্ত ১০৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। হ্যারি ব্রুকও দু’বার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান, ব্যক্তিগত ৪৬ এবং ৮২ রানের মাথায় তার ক্যাচ মিস হয়। ভারতীয় ফিল্ডারদের এই ব্যর্থতা ইংল্যান্ডের রান বাড়াতে অনেকটাই সাহায্য করেছে।
শুভমান গিলদের ফিল্ডিংয়ের বেহাল দশা দেখে অন্যতম ধারাভাষ্যকার দিনেশ কার্তিক মন্তব্য করেছেন যে, গত পাঁচ বছরে কোনো টেস্টে ভারতের এত খারাপ ফিল্ডিং তিনি দেখেননি। সুনীল গাভাস্কারও ভারতীয় দলের এই পারফরম্যান্স নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এই ক্যাচ ফেলার মহোৎসব কেবল বোলারদের হতাশই করেনি, দলের জয়ের সম্ভাবনাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। এই দুর্বল ফিল্ডিং নিয়ে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে যে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, তা বলাই বাহুল্য।