ইউক্রেনে আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। আজ বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় নিপ্রো শহরে এ হামলা চালানো হয়। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের তো যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তিশালী এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হলো। তাই এই হামলাকে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুধু নজিরবিহীন নয়, আইসিবিএম ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধে সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা যুক্ত হলো। এর আগে গত দুই দিনে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। তখনই এ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল মস্কো। এরপর আজ এই হামলা চালাল দেশটি।
আইসিবিএম মূলত পারমাণবিক অস্ত্র বহনের জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে আজ ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে পারমাণবিক অস্ত্র ছিল না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি স্পষ্ট করেনি ইউক্রেনও। সূত্রের বরাতে কিয়েভভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইউক্রেইনস্ক প্রাভদা জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম আরএস–২৬ রুবেঝ। এটি ৫ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে প্রথম আরএস-২৬ রুবেঝ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করে সফল হয় রাশিয়া। এর উচ্চতা ৪০ ফুট। ওজন ৩৬ হাজার কেজি। একটি আরএস-২৬ রুবেঝ ক্ষেপণাস্ত্র ৮০০ কেজি ওজনের পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারে।
আইসিবিএম ব্যবহার করে এই রুশ হামলায় কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দেয়নি ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। দেশটির বিমানবাহিনী শুধু জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি রুশ ফেডারেশনের আস্ত্রাখান অঞ্চল থেকে ছোড়া হয়। এর দূরত্ব নিপ্রো থেকে ৭০০ কিলোমিটারের বেশি। তবে আঞ্চলিক গভর্নর সেরহি লিসাক বলেছেন, রাশিয়ার হামলায় নিপ্রো শহরের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে আগুন ধরে যায়। এতে দুজন আহত হয়েছেন।
তবে এ হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া। এ নিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তিনি তাঁদের রুশ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাও।