রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মনে করেন, তার পক্ষে ইউক্রেন যুদ্ধে পরাজিত হওয়া সম্ভব না। বরং যুদ্ধের তীব্রতার মাত্রা আগের চেয়ে আরো বাড়াতে হবে।
কিন্তু সেটা করতে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো লক্ষণ তার মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।
পুতিন সম্পর্কে এসব কথা বলেছেন মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক বিল বার্নস। খবর: আল জাজিরার।
বিল বার্নস বলেন, রুশ সেনারা কিয়েভ দখল করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের দনবাসের প্রধান যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আনতে লড়াই করছে। এতো কিছু সত্ত্বেও তার বাহিনী ইউক্রেন সেনাদের হারাতে পারবে পুতিনের এই বিশ্বাসে বদল আসেনি।
ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্টের মনোভাব সম্পর্ক বলতে গিয়ে সিআইএ প্রধান বলেন, প্রধান যুদ্ধ ক্ষেত্রগুলোতে পরাজয় সত্ত্বেও নিজের বাহিনীর প্রতি পুতিনের বিশ্বাসে ঝাঁকুনি লাগেনি। পুতিন এমন এক ধারণা নিয়ে আছেন যেখানে তিনি যে হারতে পারেন সেটা বিশ্বাসই করেন না, বলেন বার্নস।
বিল বার্নস বলেন, ইউক্রেনের সেনাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েও রাশিয়ান নেতার উৎসাহে ভাটা পড়েনি। কারণ তিনি এই আক্রমণ চালাতে অনেকটা পণই করেছেন।
বার্নস বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে আমি কৌশলগত পারমাণবিক হামলা চালাতে রাশিয়ার কোনো পরিকল্পনা দেখছি না। তবে রাশিয়ার নেতৃত্ব থেকে যে ধরনের সামরিক হামলার হুমকি পাওয়া যাচ্ছে, সে আশঙ্কাগুলো আমরা হালকাভাবেও নিতে পারি না। তবে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বার্নস কোনো মূল্যায়ন করেননি। যুদ্ধ কীভাবে শেষ হতে পারে তা নিয়েও কোনো ভবিষ্যদ্বাণীও করেননি।
সিআইএ প্রধান কথা বলেন চীন প্রসঙ্গেও, যারা এখন ওয়াশিংটনের প্রাথমিক প্রতিপক্ষ। সিআইএ প্রধান বলেন, চীন এখন ইউক্রেন যুদ্ধ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এটা তারা করছে তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ইচ্ছা থেকে।
বার্নস বিশ্বাস করেন না যে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তাইওয়ানকে একীভূত করার লক্ষ্য থেকে সরে এসেছেন; সেটা প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে হলেও। তবে বার্নস মনে করেন ইউক্রেনে রুশ সেনাদের দুর্বল পারফরম্যান্স ও ইউক্রেনের প্রতিরোধ চীনের প্রেসিডেন্টকে অবাক করেছে। একইভাবে অবাক করেছে ইউক্রেনকে দেওয়া পশ্চিমা সামরিক সহায়তাও।
রাশিয়ার ‘ইউক্রেন অভিজ্ঞতা’ সম্ভবত তাইওয়ান নিয়ে চীনের হিসেব নিকেশকে প্রভাবিত করেছে বলেও মনে করেন সিআইএ প্রধান। তিনি আরও বলেন, পুতিন যা করেছেন তা ইউরোপিয়ান ও আমেরিকানদের আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। এটা বেইজিংকে ‘অস্থির’ করে তুলেছে।