রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে পরমাণু যুদ্ধের হুমকি বাড়ছে এবং বিষয়টিকে ছোট করে দেখা উচিৎ নয়। আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টিতে ন্যাটো এরই মধ্যে কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে পরোক্ষভাবে ‘প্রক্সি যুদ্ধে’ জড়িয়ে গেছে।
গতকাল রাশিয়ার জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ জানান, ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে যেকোনো চুক্তিতে যুদ্ধক্ষেত্রের চলমান পরিস্থিতি বেশ প্রভাব ফেলবে।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়ানো কতটুকু জরুরি?—এমন প্রশ্নের জবাবে ল্যাভরভ বলেন, ‘রাশিয়া যেকোনো মূল্যে পারমাণবিক যুদ্ধ এড়ানোর নীতিতে স্থির থাকতে চায়। এটাই আমাদের মূল অবস্থান। এ মুহূর্তে এ ধরনের কিছু ঘটার ঝুঁকি অনেক।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা কৃত্রিমভাবে এই ঝুঁকি বাড়াতে চাই না। অনেকেই সেরকমটা চাইবেন। এ মুহূর্তে গুরুতর ও প্রকৃত বিপদের অস্তিত্ব আছে এবং আমরা একে হালকাভাবে নিতে চাই না।’
আজ মঙ্গলবার ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ৬০ দিন পূর্ণ হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের কোনো রাষ্ট্রে অপর কোনো রাষ্ট্রের এটাই সবচেয়ে বড় আকারের হামলা।
পশ্চিমের দেশগুলোর দাবি, এ যুদ্ধে উভয় পক্ষের বেশ কয়েক হাজার সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মস্কোর ভাষায়, এই ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ লক্ষ্য হচ্ছে ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ ও উগ্র জাতীয়তাবাদীদের হাত থেকে রক্ষা করা। ইউক্রেন ও মিত্ররা একে মিথ্যে অজুহাত বলে অভিহিত করেছে।
মস্কোর উদ্যোগকে সমর্থন করে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ফলপ্রসূ আলোচনা না হওয়ার জন্য ওয়াশিংটন দায়ী। আমরা ইউক্রেনে বসবাসরত রুশদের সুরক্ষিত করার উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছি দেখে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।’
তিনি জানান, পশ্চিমের কাছ থেকে জ্যাভেলিন ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, সাঁজোয়াযান ও অত্যাধুনিক ড্রোনের মতো উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র ইউক্রেনে আসার বিষয়টি পুরোপুরি উসকানিমূলক এবং এতে যুদ্ধ দ্রুত শেষ হওয়ার পরিবর্তে আরও স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেনের অস্ত্রাগারগুলোকে লক্ষ্য করে একাধিকবার হামলা চালানো হয়েছে। এটা ভিন্ন কিছু নয়। বস্তুত, ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে প্রক্সি যুদ্ধ করছে। তারা তাদের প্রক্সিকে অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত করছে।’