আরজি কর মেডিকেল কলেজে তরুণী চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে মঙ্গলবার শিয়ালদা আদালতে সিবিআইয়ের জমা দেওয়া চতুর্থ স্টেটাস রিপোর্ট নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পরিবার ও তাদের আইনজীবীরা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে অগ্রগতি ও স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা, যা আদালতকেও উদ্বিগ্ন করেছে।
আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন, মৃত চিকিৎসকের পরিবারের আইনজীবী সিবিআইয়ের তদন্ত পদ্ধতির প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “কেবল পুরনো স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তদন্তের কোনো অগ্রগতি হয়নি এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র উপেক্ষা করা হয়েছে। আইনজীবীর দাবি, মৃত্যুর আগে তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে ৯০ দিন ধরে বিনা প্রমাণে আটকে রাখার বিষয়েও আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না থাকে, তাহলে কেন তাদের আটক করা হয়েছিল?” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, স্টেটাস রিপোর্টগুলিতে কেবল পূর্ববর্তী তথ্যের পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে এবং কোনো নতুন তথ্য দেওয়া হয়নি।
সিবিআইয়ের ব্যাখ্যায় শিয়ালদা আদালতও অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং মামলার জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়। আদালত পর্যবেক্ষণ করে যে, কেবল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা যথেষ্ট নয়। একজন সরকারি চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে এবং এই মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। আদালত সিবিআইকে ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে পরবর্তী স্টেটাস রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে, ইঙ্গিত দিয়েছে যে আর দেরি হলে সহ্য করা হবে না।
তরণীর বাবা-মাও তদন্তের গতি নিয়ে তাদের গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। মা প্রশ্ন তুলেছেন, এটি এত গুরুতর ঘটনা যা প্রাতিষ্ঠানিক ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়। পরিবারের অভিযোগ, সিবিআই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া সত্ত্বেও, অজানা কারণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এই ঘটনাটি সিবিআইয়ের তদন্তের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে যখন একটি স্পর্শকাতর মামলায় আদালতের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারও তদন্তের গতি নিয়ে অসন্তুষ্ট। আগামী ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে সিবিআই কী নতুন তথ্য নিয়ে আসে, তার দিকেই এখন সকলের নজর।
