
ভারতের রাজস্থানের দওসা বিভাগে হোলি উৎসবের নামে এক মর্মান্তিক ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে এলাকা। গায়ে হোলির রঙ মাখাতে না দেওয়ায় ২৫ বছর বয়সী এক যুবককে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) স্থানীয় পুলিশ এই ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ঘটনার বিবরণ
দওসা বিভাগের রালওয়াস গ্রামে বুধবার সন্ধ্যায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। পুলিশের অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট দিনেশ আগারওয়াল জানান, অশোক, বাবলু ও কালুরাম নামে তিন যুবক স্থানীয় একটি লাইব্রেরিতে গিয়ে হংসরাজ নামে এক যুবকের গায়ে হোলির রঙ মাখাতে চান। হংসরাজ সেখানে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং রঙ মাখাতে বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিন যুবক তাকে লাথি মারে এবং বেল্ট দিয়ে পেটায়। এরপর তাদের একজন হংসরাজকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
উত্তাল গ্রামবাসী
হংসরাজের মৃত্যুর পর তার পরিবার ও গ্রামবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা লাশ নিয়ে স্থানীয় মহাসড়ক আটকে দেন এবং রাত ১টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন। প্রতিবাদকারীরা হত্যাকারীদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার, হংসরাজের পরিবারকে ৫০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ এবং তার পরিবারের এক সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশের আশ্বাসে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেন এবং লাশ বাড়ি নিয়ে যান।
পুলিশের তদন্ত
পুলিশ এই ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত চালাচ্ছে। দিনেশ আগারওয়াল বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা দ্রুততম সময়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করব।” তিনি আরও জানান, হংসরাজের পরিবার ও গ্রামবাসীর দাবিগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় গ্রামবাসী এবং স্থানীয়রা গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই বলছেন, হোলির মতো পবিত্র উৎসবের নামে এমন হিংসাত্মক ঘটনা সম্পূর্ণভাবে নিন্দনীয়। হংসরাজের পরিবার ও বন্ধুরা তার মৃত্যুতে শোকাহত। তারা দ্রুত ন্যায়বিচার চাইছেন।
সামাজিক মাধ্যমেও প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার খবর সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। নেটিজেনরা হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। অনেকেই হোলি উৎসবের সময় সতর্কতা ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই ঘটনা রাজস্থানের দওসা বিভাগে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পুলিশের তদন্ত ও গ্রেপ্তারের অপেক্ষায় রয়েছে এলাকাবাসী। হংসরাজের পরিবার ও গ্রামবাসীর দাবিগুলো কতটা পূরণ হয়, তা এখন দেখার বিষয়।