
ফ্লাইওভারের উপর গাড়ির লম্বা লাইন। রাতের শহরে ব্যস্ত রাস্তায় আচমকা এমন যানজট দেখে অবাক স্থানীয়রা। কেউ ভেবেছিলেন দুর্ঘটনা, কেউ বা পথ আটকে কোনও আন্দোলন। কিন্তু বাস্তব কারণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। জয়পুরের এক ফাইভ স্টার হোটেলের একটি ঘরের জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছিল এক দম্পতির ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত—আর সেটাই আকর্ষণ হয়ে দাঁড়ায় রাস্তায় চলা গাড়ি চালকদের কাছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার, ১৭ জুন। জয়পুর শহরের একটি অভিজাত হোটেলের ঘরে ছিলেন এক দম্পতি। ঘরটি এমনভাবে অবস্থিত ছিল, যাতে পাশের ফ্লাইওভার থেকে সরাসরি দেখা যাচ্ছিল ভিতরের দৃশ্য। সেই ঘরে কোনও পর্দা ছিল না। ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়ার সময় এক চালক সেই দৃশ্য দেখে থামিয়ে দেন তাঁর গাড়ি। আর সঙ্গেই থেমে যায় পিছনের গাড়িগুলিও। তৈরি হয় যানজট।
ধীরে ধীরে একাধিক গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে, আর বেশ কয়েকজন ওই ঘরের দিকে তাকিয়ে মোবাইল ক্যামেরা অন করে দেন। শুরু হয় ভিডিও রেকর্ডিং। সেই ভিডিওর কিছু ফুটেজ পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ভাইরাল ভিডিওতে অস্পষ্টভাবে ওই দম্পতিকে দেখা যাচ্ছে ঘনিষ্ঠ অবস্থায়। তবে তাঁদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ভিডিও রেকর্ডকারী চালকের পরিচয়ও অজ্ঞাত।
ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই দুই দিক থেকেই উঠেছে তীব্র সমালোচনা। একদিকে কেউ বলছেন, জানলার পর্দা না টাঙিয়ে ওই কাপল দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। অন্যদিকে, অনেকেই একে বলছেন সরাসরি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার চরম লঙ্ঘন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক মন্তব্য উঠে এসেছে—
একজন লিখেছেন, “এই ভিডিও তোলা এবং ছড়ানো সম্পূর্ণ বেআইনি। ভারতীয় আইন অনুযায়ী, এটি গোপনীয়তার লঙ্ঘন।”
আরেকজনের মন্তব্য, “যদি ওরা হোটেল ঘরে থাকেন, তবে সেটি তাঁদের ব্যক্তিগত পরিসর। জানলার দিকে তাকিয়ে ভিডিও বানানো অনৈতিক এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।”
তবে কেউ কেউ বলছেন, কাপলেরও আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।
“পর্দা না টাঙিয়ে তাঁরা নিজেরাই ভুল করেছেন। এটা হোটেলেরও দায়িত্ব যে এই ধরনের ঘর বাইরের দৃষ্টির আড়ালে রাখা হোক।”—লিখেছেন এক নেটিজেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তাঁদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা সংক্রান্ত ব্যবস্থার অভাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকে। যদিও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনো পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কেউ ভিডিওগ্রাহকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।