স্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে অশালীন রিল পোস্ট করার এক বিস্ফোরক অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার হলেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মেদিনীপুর জেলা থেকে অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতের নাম চিন্ময় আচার্য (২৭)। তাঁর বাড়ি মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর থানার অন্তর্গত পাপাস গ্রামে। জানা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়ের সূত্র ধরে তাঁদের প্রেম হয় এবং দেড় বছর আগে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরেই গৃহবধূ জানতে পারেন যে, তাঁর স্বামীর অন্য এক তরুণীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এই বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই শুরু হয় তাঁদের পারিবারিক অশান্তি।
গৃহবধূ তাঁর অভিযোগে জানান, প্রায় চার মাস আগে চিন্ময় তাঁকে তাঁর বাপের বাড়িতে ফেলে রেখে চলে যান। এরপর ফোনে তাঁর কোনো খোঁজখবর নেননি। উপরন্তু, চলে যাওয়ার সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে সোনার গয়না ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রীও নিয়ে যান বলে অভিযোগ। এই মানসিক যন্ত্রণার মধ্যেই একদিন হঠাৎ তাঁর নজরে পড়ে যে, একটি ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে তাঁর ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে বিভিন্ন অশালীন রিল পোস্ট করা হচ্ছে। গৃহবধূ নিশ্চিত, এই ছবিগুলো একমাত্র চিন্ময়ের কাছেই ছিল।
“আমার স্বামী ইচ্ছাকৃতভাবে আমার চরিত্র হননের চেষ্টা করছে,” ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই গৃহবধূ। “ওর কাছেই আমার ব্যক্তিগত ছবি ছিল। সেই ছবিগুলো দিয়েই এই নোংরামি করা হয়েছে।”
রায়গঞ্জ থানার পুলিশ চিন্ময় আচার্যের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে। রবিবার দুপুরে তাকে রায়গঞ্জ মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এই ঘটনা আবারও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নারী সুরক্ষার বিষয়টি সামনে আনল। প্রযুক্তির অপব্যবহার করে কীভাবে ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কলুষিত করা হচ্ছে এবং একজন নারীর সম্মানহানি করা হচ্ছে, তা এই ঘটনায় স্পষ্ট। সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তৎপরতা যেমন জরুরি, তেমনই সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
