OMG! স্কুলে যাওয়ার পথে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেফতার হলেন ২ অভিযুক্ত

উত্তর প্রদেশে ১৪ বছর বয়সী এক দলিত স্কুলছাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে তিন যুবক তাকে অপহরণ করে পাশবিক নির্যাতন চালায়। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ১৫ বছর বয়সী কিশোরও রয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য এবং ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার সকালে। দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া ওই ১৪ বছর বয়সী দলিত কিশোরী স্কুলে যাচ্ছিল। সেই সময় অভিযুক্ত ১৫ বছর বয়সী কিশোর একটি গাড়িতে এসে মেয়েটির সামনে দাঁড়ায় এবং তাকে স্কুলে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলে নেয়।

তবে, অভিযুক্তরা মেয়েটিকে স্কুলে না নিয়ে অন্য দিকে গাড়ি চালিয়ে যায়। মাঝপথে আরও দুই অভিযুক্ত, প্রদীপ (১৮) এবং সৌরভ (১৮) সেই গাড়িতে ওঠে। এরপর তারা মেয়েটিকে জোর করে একটি নির্জন ঘরে নিয়ে যায়। সেখানেই কিশোরীটিকে প্রথমে বেঁধে, তার মুখ চেপে ধরে তিনজন মিলে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলার পর যখন মেয়েটি জ্ঞান ফিরে পায়, তখন অভিযুক্তরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। জ্ঞান ফেরার পর কিশোরীটি নিজের অসহায় অবস্থা বুঝতে পেরে সাহায্যের জন্য চিৎকার শুরু করে।

ধর্ষণের শিকার মেয়েটি কোনোমতে নিজেকে মুক্ত করে প্রথমে তার কাকিমাকে ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। এরপর কাকিমা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পুরো বিষয়টি জানান। ভুক্তভোগী কিশোরীর মায়ের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-র ধারা ১১৫(২) (স্বেচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করা), ৩৫২ (শান্তি ভঙ্গের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করা), ৭০(১) (দলবদ্ধ ধর্ষণ) এবং ১১০ (অপরাধমূলক হত্যার চেষ্টা) সহ পকসো আইন (POCSO Act) এবং তফশিলি জাতি ও তফশিলি উপজাতি (নৃশংসতা প্রতিরোধ) আইনের বিভিন্ন গুরুতর ধারায় মামলা দায়ের করেছে।

পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রুত অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবারই ১৮ বছর বয়সী দুই অভিযুক্ত – প্রদীপ ও সৌরভকে গ্রেফতার করেছে। ১৫ বছর বয়সী নাবালক অভিযুক্তকেও আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জন্য বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অখণ্ড প্রতাপ সিং।

পুলিশি তদন্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এসেছে। জানা গেছে, এই ভয়াবহ ঘটনার একদিন আগে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন (সম্ভবত নাবালক) ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। সে মেয়েটিকে তার সঙ্গে দেখা করতে অনুরোধ করেছিল, কিন্তু মেয়েটি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। মনে করা হচ্ছে, এই প্রত্যাখ্যানই এই পাশবিক নির্যাতনের নেপথ্য কারণ হতে পারে।

এই ঘটনা উত্তর প্রদেশের নারী নিরাপত্তা এবং বিশেষ করে দলিত সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের বিষয়টি আবারও সামনে এনেছে। পুলিশ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy