
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আবারও চাঞ্চল্য। মুর্শিদাবাদের সুতি থানার নূরপুর সীমান্তে কর্তব্যরত এক বিএসএফ জওয়ানকে অপহরণ করে বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে বিএসএফ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পর ওই জওয়ানকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গেছে। এদিকে, অপহরণের একটি চাঞ্চল্যকর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে (যদিও এই সময় অনলাইন ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি)।
জানা গেছে, বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার নুরপুরের বিওপি-তে টহল দিচ্ছিলেন ওই বিএসএফ জওয়ান। সেই সময় চাঁপাই-নবাবগঞ্জ জেলার পাতলাটোলা এলাকা দিয়ে কয়েকজন বাংলাদেশি বেআইনিভাবে গরু নিয়ে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। কর্তব্যরত জওয়ান তাদের বাধা দিলে শুরু হয় তর্কাতর্কি। পরিস্থিতি দ্রুত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় যখন বাংলাদেশিরা ওই জওয়ানের ওপর হামলা চালায়। তারা জওয়ানের আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের দিকে ছুটতে শুরু করে। অস্ত্র উদ্ধার করতে পিছন পিছন দৌড়ন ওই জওয়ানও।
ঘটনার আকস্মিকতায় দু’পক্ষই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। সেখানেই বাংলাদেশিরা জওয়ানকে ধরে ফেলে এবং পাশ্ববর্তী একটি কলাবাগানে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। এই ঘটনারই একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশিরা আঙুল তুলে জওয়ানকে শাসাচ্ছেন এবং রীতিমতো হুমকি দিচ্ছেন। ভিডিওতে জওয়ানকেও পাল্টা সাবধান করতে দেখা যাচ্ছে।
অপহরণের পর বাংলাদেশিরা ওই জওয়ানকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর হাতে তুলে দেয়। খবর দ্রুত বিএসএফের কাছে পৌঁছায়। সূত্রের খবর, বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগ আধিকারিক এন কে পান্ডে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সীমা সুরক্ষা বাহিনীর আধিকারিকদের মধ্যে দ্রুত একটি ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়। আলোচনার পর জওয়ানকে মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়ে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
এন কে পান্ডে আরও বলেন, “একজন বিএসএফ জওয়ানকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পরে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। একটি ভাইরাল ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। ভিডিওটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গিহানার ঠিক পরের দিন পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সীমান্তে ডিউটি চলাকালীন ‘ভুল করে’ সীমান্ত পেরনোর অভিযোগে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের হাতে আটক হয়েছিলেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। ১৪ মে তাঁকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান। এবার বিএসএফ জওয়ানকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল বাংলাদেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে, যা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা এবং অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল। এই ঘটনা দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের গুরুত্ব আরও একবার তুলে ধরেছে।