
ট্রেনের সামান্য সিট নিয়ে শুরু হওয়া ঝগড়া যে এমন ভয়াবহ পরিণতি আনতে পারে, তা সম্ভবত কেউ ভাবেনি। উত্তরপ্রদেশের বাগপতে দিল্লি থেকে ফেরার পথে চলন্ত ট্রেনে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হলো এক যুবককে। অভিযোগ, সিট নিয়ে বিবাদের জেরেই দীপক যাদব নামের ওই যুবককে মারধর করে মৃত অবস্থায় স্টেশনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় কিছু দুষ্কৃতী। এই ঘটনা দিল্লি-শামলি প্যাসেঞ্জার ট্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
বাগপতের খেকরা শহরের বাসিন্দা দীপক যাদব প্রতিদিনের মতো দিল্লি-ভাগীরথ প্যালেসে তাঁর কাজ সেরে দিল্লি-শামলি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, ট্রেনেই কিছু যুবকের সঙ্গে সিট নিয়ে তাঁর বচসা শুরু হয়। এই বিবাদ মুহূর্তেই চরম আকার ধারণ করে।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, রাহুল বাবা নামের এক যুবক এবং তার বন্ধুরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী। সিট নিয়ে ঝগড়া এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই দীপককে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধরের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, দীপক গুরুতর আহত হন। এরপর দুষ্কৃতীরা তাকে বাগপত স্টেশনে মৃতপ্রায় অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
স্টেশনে খবর পেয়ে দীপককে গুরুতর আহত অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে দীপক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ততক্ষণে তাঁর পরিবারও স্টেশনে পৌঁছেছে, কিন্তু সব শেষ।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে শুধু সিট বিবাদই নয়, পুরনো শত্রুতাও কাজ করেছে। কয়েকদিন আগে দীপকের বন্ধুদের সঙ্গে রাহুল বাবা এবং তার বন্ধুদের ঝগড়া হয়েছিল। সেই পুরনো শত্রুতার আগুন এবং সিট বিবাদের সূত্র ধরেই দীপকের জীবন কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে বাগপত পুলিশ মামলাটি GRP (Government Railway Police)-এর কাছে হস্তান্তর করেছে। GRP সিও শ্বেতা আশুতোষ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “খুনের সাথে জড়িত কোনো অভিযুক্তই পালাতে পারবে না। তাদের শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনা আবারও চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং সামান্য বিবাদের ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়াল।