বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্ভিদের সন্ধান মিলেছে। এটি একটি ‘সি গ্রাস’ বা সামুদ্রিক ঘাস, যা নিউইয়র্কের ম্যানহাটন এলাকার চাইতেও তিন গুণ বড়।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র উপকূলে এই গাছটির সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। গাছটির জিনগত পরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলে পানির নিচের বৃহৎ এই ঘাসটি আসলে একটিই গাছ।
ধারণা করা হচ্ছে, একটি মাত্র বীজ থেকে সাড়ে চার হাজার বছর ধরে গাছটি বেড়ে উঠেছে।
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, এই সি গ্রাস ২০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে আছে। তারা বলছেন, এই উদ্ভিদের আকার ২০ হাজার ফুটবল মাঠের সমান।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহর থেকে ৮০০ কিলোমিটার উত্তরে শার্ক বে-তে অনেকটা আকস্মিকভাবেই বিজ্ঞানীরা এই উদ্ভিদের খোঁজ পান। এরপর তারা এই উদ্ভিদের জিনগত বৈশিষ্ট্য বোঝার চেষ্টা করেন।
এই সি গ্রাস ‘রিবন উইড’ নামেও পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র উপকূলে এই উদ্ভিদটি পাওয়া যায়।
গবেষণার লক্ষ্যে বিজ্ঞানীরা উপকূল থেকে এই গাছটির অঙ্কুর সংগ্রহ করেন এবং প্রায় ১৮ হাজার জিন পরীক্ষা করে দেখেন। এর মাধ্যমে তারা সেখানে কতোগুলো উদ্ভিদ আছে সেটা বোঝার চেষ্টা করেন।
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন গবেষক ‘জেন এজলো’। তিনি দেশটির গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘গবেষণার উত্তরে আমরা চমকে গেছি- সেখানে মাত্র একটিই গাছ। শার্ক বে-র ১৮০ কিলোমিটার-জুড়ে এই একটিই গাছ ছড়িয়ে পড়েছে ফলে এখনও পর্যন্ত এটিই বিশ্বের বৃহত্তম উদ্ভিদ।’
আরেকজন গবেষক ড. এলিজাবেথ সিনক্লেয়ার বলেন, ‘এই সি গ্রাসের দৃঢ়তাও উল্লেখযোগ্য। নানা রকমের পরিবেশ পরিস্থিতির মধ্যেই এই সি গ্রাসটি বেড়ে উঠতে পারে। এটি টেকসই বলে মনে হচ্ছে। নানা মাত্রার তাপ, লবণাক্ততা এবং তীব্র আলোর মধ্যেও এটি টিকে আছে। এই উদ্ভিদটি বছরে ৩৫ সেন্টিমিটার করে বাড়ে। এবং এই হিসাব থেকে গবেষকরা বের করেছেন যে বর্তমান অবস্থায় আসতে এই গুল্মের সাড়ে চার হাজার বছর লেগেছে।’